ব্যুরো নিউজ,৯ এপ্রিল: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হলো “বিষু”, যা এখানকার মানুষের ঐতিহ্যবাহী নববর্ষ উৎসব হিসেবে পালিত হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে এই দিনটি সাধারণত ১৪ এপ্রিল পড়ে, তবে এটি বসন্ত বিষুবের সাথে মিলে যায় এবং কেরালার বিভিন্ন অংশে একসাথে আনন্দ ও নতুন সূচনার উৎসবে পরিণত হয়। বিষু, শুধু একটি নতুন বছরের শুরু নয়, এটি কেরালাবাসীর জন্য পারিবারিক বন্ধন, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির পুনর্জন্মের প্রতীক।
বিষু কীভাবে পালিত হয়?
বিষু উৎসব মূলত একটি সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় মিলনমেলা। এই দিনটি শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের একসাথে জমায়েত হয়ে ঐতিহ্য অনুযায়ী কিছু বিশেষ জিনিসপত্র সাজিয়ে রেখে, এগুলি প্রথম দেখার মাধ্যমে বছরের প্রথম সূচনা করা হয়। এসবের মধ্যে থাকে ফুলের ফুল, রূপার মুদ্রা, ভাত এবং অন্যান্য জিনিস, যা ভবিষ্যতের জন্য সৌভাগ্যের ইঙ্গিত হিসেবে মনে করা হয়। এই নিয়মে, প্রথমে যেগুলি চোখে পড়ে তা বছরের সাফল্য ও সুখের চিহ্ন হয়ে ওঠে।
আইএসএল ফাইনাল: মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি, কে হাসবে শেষ হাসি?
এছাড়া, বিষুতে কেরালার মানুষ বিশেষ খাবার খেতে পছন্দ করেন, যার নাম “সাধ্য খাবার”। এটি এমন একটি খাদ্য, যা বিভিন্ন ধরনের স্বাদ যেমন লবণাক্ত, মিষ্টি, টক এবং তিক্ত একসাথে মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এই খাবারটি জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যেখানে ভালো-মন্দ সব কিছুই মিশে থাকে।
ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির মিশেল বিষুতে কেরালাবাসীরা নতুন পোশাক পরিধান করে, যা তাদের নতুন বছরের শুভ সূচনা ও সৌভাগ্য কামনা করে। শিশুদের জন্য দিনটি আরও আনন্দদায়ক হয় কারণ তারা আতশবাজি ফোটায় এবং মিষ্টান্ন খায়। এছাড়া, ভক্তরা খুব ভোরে কৃষ্ণ মন্দিরে গিয়ে পূজা দেন এবং নতুন বছরকে সঠিকভাবে শুরু করার জন্য প্রার্থনা করেন। কেরালার বিষু উৎসবটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উদযাপন নয়, বরং এটি কেরালার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিবারিক সম্পর্কের গুরুত্বকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার একটি সুযোগ। এটি একটি বিশেষ দিন, যখন মানুষ নিজেদের অতীতের দিকে ফিরে দেখে এবং ভবিষ্যতের জন্য একসাথে নতুন আশা নিয়ে চলতে শুরু করে। কেরালার বিষু উৎসবটি সবার মধ্যে ঐক্য ও প্রাচীন সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জন্মানোর একটি সুযোগ হিসেবে কাজ করে। এটি কেবল নতুন বছরের শুরু নয়, বরং একসাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্তের প্রতীক, যেখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় উপাদান একত্রিত হয়ে একটি মিলিত উৎসব তৈরি করে।