ব্যুরো নিউজ,১৭ এপ্রিল: সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এক ভিডিয়ো, যেখানে এক প্রভাবশালী সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, বলিউড তারকা শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খানের রেস্তরাঁ ‘তরী’-তে নাকি ‘নকল’ পনির পরিবেশন করা হচ্ছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, আয়োডিন টেস্টে পনিরের রং বদলে গিয়ে কালো হয়ে যাচ্ছে। তিনি তুলনা করেছেন শিল্পা শেট্টি, বিরাট কোহলি এবং ববি দেওলের রেস্তরাঁর পনিরের সঙ্গে—সেখানে নাকি রঙ বদলায়নি। এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়তেই ‘তরী’ রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেন, ‘‘আয়োডিন টেস্টে কেবল শর্করার উপস্থিতি বোঝা যায়, পনিরের আসল বা নকলত্ব নয়। আমাদের পনির সয়াবিন দুধ দিয়ে তৈরি, তাই রং বদলানো স্বাভাবিক।’’
আয়োডিন টেস্ট কী বলছে? কতটা ভরসাযোগ্য?
আয়োডিন টেস্ট মূলত এক ধরনের প্রাথমিক পরীক্ষা, যেখানে পনিরের উপর টিংচার আয়োডিন ফেলা হয়। যদি তাতে রং কালো বা নীল হয়ে যায়, তার মানে পনিরে শর্করা রয়েছে। আর যদি রং না বদলায়, তাহলে বোঝা যায় তাতে শর্করা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নয়ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের বিভাগীয় প্রধান ডা. কিরণ সোনি বলেন, ‘‘এই টেস্টে শুধু জানা যায় পনিরে শর্করা আছে কি না। সেটি যে ভেজাল বা ক্ষতিকর উপাদান তা বলা যায় না। অনেক সময় গঠন ঠিক রাখতে ময়দা বা নিরীহ অ্যাডিটিভও মেশানো হয়। রান্নার সময়ও পনিরে শর্করা ঢুকে যেতে পারে।’’
তাই আয়োডিন টেস্টে রং বদলানো মানেই যে পনির ভেজাল তা বলা যাবে না। একমাত্র ল্যাবরেটরিতে বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে, পনিরে আদৌ ক্ষতিকর রাসায়নিক বা সিন্থেটিক উপাদান আছে কি না। উল্লেখ্য, বাজারে বহু সময়ই নকল পনির পাওয়া যায় যা তৈরি হয় ক্ষতিকর পাম অয়েল, সিন্থেটিক মিল্ক সলিড, বা অ্যাডিটিভ দিয়ে। এগুলো দীর্ঘদিন খেলে হজমের সমস্যা, হৃদ্রোগ বা অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।
শুরু ধোঁয়া থেকে, শেষ কোথায়? রেলের আগুন এখন নিয়মিত আতঙ্ক!
তবে গৌরী খানের রেস্তরাঁ ‘তরী’ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা সয়াবিন দুধ থেকে পনির তৈরি করে, যা ভেজাল নয় বরং একটি বিকল্প প্রোটিন উৎস। সুতরাং, আয়োডিন টেস্ট কেবল প্রাথমিক নির্দেশ দিতে পারে—ভেজাল নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো না যাওয়াই বাঞ্ছনীয়।