ব্যুরো নিউজ, ৯এপ্রিল: মহা বিষুব সংক্রান্তি, যা ওড়িশা অঞ্চলের অন্যতম প্রধান উৎসব, নতুন কৃষি ঋতুর শুরু এবং ওড়িয়া নববর্ষের প্রতীক। এই দিনটি কৃষকদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নতুন ফসলের আশীর্বাদ লাভের মুহূর্ত। পাশাপাশি, এই দিনটি ভগবান হনুমানের জন্মদিন হিসেবেও পালিত হয়, যা ওড়িয়া সংস্কৃতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মীয় বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সাম্প্রদায়িক ঐক্যের মিশ্রণ হিসেবে মহা বিষুব সংক্রান্তি উদযাপিত হয়, যা ওড়িশার মানুষের জন্য অত্যন্ত আনন্দদায়ক একটি দিন।
বৈশাখী উৎসবে সেরা এবং ইউনিক লুক পেতে জানুন এই স্টাইলিং টিপস!
মহা বিষুব সংক্রান্তি উদযাপনের ঐতিহ্য
মহা বিষুব সংক্রান্তি শুধুমাত্র একটি কৃষি উৎসব নয়, এটি ওড়িশার মানুষদের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক একত্রিত হওয়ার একটি উপলক্ষও। এই দিনটিকে উদযাপন করার নানা প্রথা ও রীতিনীতি রয়েছে:
পানা প্রস্তুতি এবং সেবন: পানা সংক্রান্তির অন্যতম আকর্ষণ হল “পানা” নামক বিশেষ পানীয়। এটি তৈরি হয় জল, চিনি, ফল, বেল এবং অন্যান্য ভেষজ উপাদান দিয়ে। এই পানীয়টি শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে শীতলতা প্রদান করে এবং তা সকলেই একত্রিত হয়ে ভাগ করে নেয়। উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকলেই এই পানা পান করেন এবং একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করেন, যা সম্প্রদায়ের ঐক্যের প্রতীক।
মন্দির পরিদর্শন এবং পূজা: মহা বিষুব সংক্রান্তি ওড়িয়া সংস্কৃতিতে ভগবান হনুমানের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। এজন্য ভক্তরা এই দিনটিতে হনুমান মন্দির, শিব মন্দির এবং সূর্য মন্দিরে গিয়ে বিশেষ পূজা এবং প্রার্থনা করেন। এই পূজার মাধ্যমে তারা নতুন বছরটি সুখী ও সমৃদ্ধি পরিপূর্ণ কাটানোর জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সাজসজ্জা: উৎসবের আগে ওড়িশার মানুষরা তাদের বাড়ি পরিষ্কার এবং সাজান, যাতে নতুন বছরটি শুভভাবে শুরু হয়। এটি একটি নতুন সূচনার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং পরিবারের মধ্যে ইতিবাচক শক্তি এবং সুখের প্রবাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
সম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান এবং মেলা: মহা বিষুব সংক্রান্তি উপলক্ষে ওড়িশা জুড়ে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেলা, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য স্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে ওড়িশার জনগণ একত্রিত হয়। এই মেলা গুলিতে সঙ্গীত, নৃত্য, এবং স্থানীয় শিল্পের প্রদর্শন থাকে, যা উৎসবের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
মহা বিষুব সংক্রান্তি শুধু একটি কৃষি উৎসব নয়, এটি ওড়িয়া জনগণের ঐতিহ্য, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের এক বিশেষ উদযাপন। এটি একটি নতুন সূচনা এবং সুখী জীবন লাভের জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনার সুযোগ।