প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি: এবার ইকুয়েডরের অ্যামাজনে দেখা মিলল প্রায় বিরল প্রজাতির সুদৃশ্য গ্রীন অ্যানাকোন্ডা। এ ধরণের অ্যানাকোন্ডা সবচেয়ে বড় হলে তার দৈর্ঘ্য হতে পারে ২৫ থেকে ৩০ ফুট। আর ওজন ৫০০ কেজিরও বেশি। ন্যাশ্যানাল জিওগ্রাফির জন্য ডকুমেন্টারি তৈরি করতে গিয়ে এ ধরণের অ্যানাকোন্ডার খোঁজ পেলেন ইউনিভার্সিটি অফ কুইসল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। এর নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক ব্যানফ্রাই। তবে, সহজে তার খোঁজ মেলেনি, হঠাৎই ইকুয়েডরে এবং ভেনেজুয়েলাতে গবেষণার কাজ করতে গিয়ে সেখানকার আদিবাসী ও উপজাতিদের থেকে জানতে পারেন যে সেখানে বৃহদাকার অ্যানাকোন্ডার উৎপাত যথেষ্ট বেশি। আর তাই শুনেই শুরু হয় খোঁজ। অবশেষে দেখা মেলে ওই গ্রীন অ্যানাকোন্ডার। যার বৈজ্ঞানিক নাম ইউনেকটিস আকাইমা। বৈজ্ঞানিকেরা লক্ষ্য করেছেন ওইখানে বহু দিন ধরে থাকা অ্যানাকোন্ডা বাচ্চা পেড়েছেও অনেক। যাদের গড় দৈর্ঘ্য ২০ থেকে ২২ ফুট। আর ওজন ১০০ কেজির কিছু বেশি। তবে এপ্রসঙ্গে জানা গেছে, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় সবচেয়ে বড় অ্যানাকোন্ডা মিলেছিল প্রায় ৪৭ ফুট লম্বা। যার ওজন প্রায় ৮০০-৯০০ কেজি। ফলে, এই প্রজাতি সরীসৃপের ওপর গবেষণায় একটা নতুন দিক খুলে গেল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানিরা। তারা বলেছেন, এই প্রজাতি হল গ্রীন অ্যানাকোন্ডারই একটি বিশেষ প্রজাতি। এতো দিন তারা প্রায় বিজ্ঞানিদের ফাঁকি দিয়েই সেখানে দিব্যি গাঢাকা দিয়েছিল।
দেশের সব থেকে বড় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র জামনগরের ‘বনতারা’
বহুকাল আগে এই গ্রীন অ্যানাকোন্ডার সবচেয়ে বড় প্রজাতি মিলেছিল ৩৩ ফুট লম্বা ও প্রায় ৪০০ কেজির কিছু বেশি ওজনের এই সরীসৃপ। ব্রাজিল, পেরু, বলিভিয়া এবং ফ্রেঞ্চ গায়ানার বেশ কিছু অংশে অ্যানাকোন্ডার উৎপাত রয়েছে। সাধারনভাবে অল্প জলে পানা বোঝাই জায়গায় তারা শুধু চোখদুটি তুলে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। শিকার পেলেই সন্তরপনে চারটি বড় দাঁত দিয়ে তাকে আটকে ফেলে। আর খানিকটা সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে ওই খাদ্য বস্তুকে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলে। জানা গেছে, পূর্ণ বয়স্ক ওই গ্রিন অ্যানাকোন্ডা মুখের হা-এর মধ্যে একটি প্রমান মানুষের মাথা সহজেই ঢুকে যেতে পারে। জলজপ্রাণী থেকে হরিণ অতি সহজেই গিলে নিতে পারে এই অ্যানাকোন্ডা। ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল, সুরিনাম, ইকুয়েডর, গায়ানা প্রভৃতি জায়গা অ্যামাজন সংলগ্ন আদিবাসীরা প্রায়ই দেখতে পায় এই গ্রীন অ্যানাকোন্ডাকে। তারাও বিশেষ বিরক্ত করে না এই সরীসৃপদের বরং সতর্কভাবে থাকে। কখন না জানি তাদের মুখে পড়তে হয়। আর একবার পড়লে আর জীবন নিয়ে ফেরা যাবে না অবশ্য আদিবাসীরা অ্যামাজনের সমস্ত বিপদ সম্বন্ধেই ওয়াকিবহাল। শিকারকে বিষ দিয়ে এরা মারেনা। বরং সারা শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে।এই ধরণের বড় সাপের ২ দুটি প্রজাতির একটি হল বোয়া ও ওপরটি হল পাইথন। পাইথন বলতে ময়াল সাপেদেরই বোঝায়। এরা আট- দশ ফুটের বেশি হয়না। কিন্তু অ্যানাকোন্ডা বোয়া গোত্রভুক্ত। তবে সমগ্র অ্যামাজন ফরেস্ট জুড়ে এই প্রজাতি বোয়ার সংখ্যা বাড়ছে। সেটা প্রকৃতির ভারসাম্য ও প্রাণীবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণার দিক থেকে যথেষ্ট আসা ব্যাঞ্জন।