ব্যুরো নিউজ ১৫ মে:পাকিস্তান সীমান্তে ২২ দিন বন্দি থাকার পর ভারতের বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ যখন ফিরে এলেন, তাঁর মুখে উঠে এল এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার বিবরণ। হুগলির বাসিন্দা পূর্ণম পহেলগাঁও হামলার ঠিক পরদিন ভুল করে পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন। তারপরই তাঁকে পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হতে হয়। দীর্ঘ ২২ দিন তাঁর ওপর চলে অকথ্য নির্যাতন। বিএসএফ সূত্রের খবর, পাক রেঞ্জার্স তাঁকে চোখ বেঁধে রেখেছিল টানা। কালো কাপড়ে বাঁধা চোখ—দিন-রাতের বোধ না থাকার সেই অন্ধকারে আটকে ছিলেন পূর্ণম। জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলত গালিগালাজ, মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হত বারবার।
বন্দিদশার ভিতর থেকে উঠে এল ভয়ঙ্কর তথ্য
বিএসএফ কর্তাদের দফায় দফায় প্রশ্নোত্তরের মুখে পড়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এসেছে সেই ২২ দিনের ঘটনার বিবরণ। পূর্ণম জানিয়েছেন, তাঁকে অন্তত তিনটি ভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি সম্ভবত পাকিস্তানের কোনও এয়ারবেস, কারণ সেখানে তিনি স্পষ্ট এয়ারক্রাফ্টের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন।
তাঁকে কখনও গারদে আটকে রাখা হত, কখনও অন্য ঘরে স্থানান্তর করা হত। কোনও রকম বিশ্রাম বা স্বস্তি ছিল না। সবসময় চোখ বেঁধে রাখা হত, যাতে তিনি কোনও স্থান চিহ্নিত করতে না পারেন। খাবার বা পানীয় দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল অপ্রতুল। সব মিলিয়ে সেই ২২ দিন ছিল নিরন্তর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের এক করুণ অধ্যায়। বুধবার সকালে, দুই দেশের যৌথ আলোচনার ফলেই পাক সেনার হাত থেকে মুক্ত হন পূর্ণম। ফিরেই নিয়ম মেনে তাঁকে চিকিৎসকদের দ্বারা শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হয় এবং বিএসএফের উচ্চপদস্থ কর্তারা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
দিঘার জগন্নাথধাম বিতর্কে মমতার গর্জন: ‘‘হিংসের ওষুধ হয় না!’’
পূর্ণমের সাহস ও ধৈর্য এই কঠিন সময়েও ভেঙে পড়েনি। তাঁর অভিজ্ঞতা এবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে—এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী? এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সীমান্তে কর্তব্যরত জওয়ানদের জীবন কতটা অনিশ্চয়তার মাঝে কাটে।