ব্যুরো নিউজ ,৫ মে: বহরমপুরে পা দিয়েই জগন্নাথধাম বিতর্কে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, দিঘায় “জগন্নাথধাম” তৈরি হওয়ায় অনেকের গায়ে লেগেছে। কিন্তু হিংসার কোনও ওষুধ নেই বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
মমতা সাফ জানিয়ে দেন
মমতা বলেন, ‘‘আমি দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক করি, প্রশ্ন হয় না। কালীঘাটে কাজ করি, কেউ কিছু বলে না। দুর্গাপুজো করি, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে না। শুধু দিঘার জগন্নাথধামটা যেন কারও সহ্য হচ্ছে না।’’
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত রাজেশ দয়িতাপতি দিঘার মন্দির উদ্বোধনে হাজির ছিলেন। এই ঘটনায় ওড়িশা সরকার তাঁকে শো-কজ় করেছে। এই প্রেক্ষিতেই মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আমরা তো পুরীতে যাই, তখন তো প্রশ্ন করি না। এত গায়ে লাগছে কেন? এত হিংসে কেন?’’
বিগ্রহে ব্যবহৃত কাঠ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, তা নাকি পুরীর নবকলেবরে ব্যবহৃত নিম কাঠের অবশিষ্টাংশ। এই প্রসঙ্গে মমতা সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘ওরা বলছে আমি নাকি নিমগাছ চুরি করেছি! আমার বাড়িতেই চারটে নিমগাছ আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত খারাপ সময় আসেনি যে গাছ চুরি করতে হবে। জগন্নাথের মূর্তি তো কিনতেই পাওয়া যায়।’’
এখানেই থামেননি মমতা। ওড়িশা সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ওড়িশায় আলুর টান পড়লে বাংলা তার জোগান দেয়। সাইক্লোনে সব উড়ে গেলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার পাঠাই। বাংলা থেকেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক পুরীতে যান। তাহলে দিঘায় একটা জগন্নাথধাম করলে এত অসুবিধে কেন?’’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওড়িশায় বাংলায় কথা বললেই নাকি মারধর করা হচ্ছে। মমতার কথায়, ‘‘অন্যান্য রাজ্যেও এটা হচ্ছে। অথচ বাংলায় দেড় কোটি বাইরের লোক থাকেন, তাঁদের কারও উপর আমরা অত্যাচার করি না। এটাই আমাদের তফাত।’’
তবে রাজ্যের সম্পর্ক খারাপ হোক চান না মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, ওড়িশা সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। মুখ্যসচিব স্বরাষ্ট্রসচিবকে চিঠি দিচ্ছেন। তাঁর কামনা, ‘‘সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’’
গত বুধবার অক্ষয়তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে পুরীর সেবায়েতদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওড়িশা সরকার। বিগ্রহে ব্যবহৃত কাঠ নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিতর্কের মাঝেই প্রতিবেশী রাজ্যের বিজেপি সরকারকেও একহাত নিলেন মমতা। তাঁর সোজাসাপটা বার্তা, ‘‘হিংসের কোনও ওষুধ হয় না।’’