ব্যুরো নিউজ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : বহু প্রতীক্ষিত কন্নড় চলচ্চিত্র ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’-এর ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে, যা মুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইন্টারনেট জুড়ে ঝড় তুলেছে। ট্রেলারটি মাত্র একদিনে ১০৭ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ এবং ৩.৪ মিলিয়ন ‘লাইক’ সংগ্রহ করেছে এবং এই সংখ্যা এখনো বেড়েই চলেছে (ইতিমধ্যেই ১৬০ মিলিয়নের বেশি ভিউ রেকর্ড করা হয়েছে)।
এই ছবিটি কান্তারা চলচ্চিত্রের প্রিক্যুয়েল। কান্তারা চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল ২০২২ সালে এবং দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন সনাতন প্রথা ভূতা কোলার ঘটনার অবলম্বনে তৈরি। এই নতুন অংশে, চলচ্চিত্রের পূর্ববর্তী ঘটনা বা ভূতা কোলা প্রথার ইতিহাস এবং উৎসর বিষয় হতে পারে।
ট্রেলারে গল্প ও চরিত্রের আভাস
ট্রেলারে ছবির সম্পূর্ণ প্লট প্রকাশ না হলেও, মূল চলচ্চিত্রের ঘটনাগুলির আগে ঘটে যাওয়া গল্পটির জন্য কৌতূহল তৈরি করেছে। এতে নতুন কিছু চরিত্রের সাথে দর্শকদের পরিচয় করানো হয়েছে, যার মধ্যে গুলশান দেবাইয়া অভিনীত একজন শক্তিশালী রাজা রয়েছেন। তাঁর চরিত্রটি গ্রামবাসীদের উপর নির্মম নিয়ন্ত্রণ চালায় এবং ফসলের আকারে ভারী কর সংগ্রহ করে। কেউ তাঁর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। গল্পে সংঘাত শুরু হয় যখন রাজ্যের রাজকুমারী ঋষভ শেট্টি-র চরিত্রের প্রেমে পড়েন। এতে রাজার ক্রোধ আরও বাড়ে। ঠিক এই সময়েই গ্রামবাসীদের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন পাঞ্জুরলি, যিনি এক উপদেবতা। ট্রেলারে উত্তেজনা, ক্ষমতা এবং দৈব হস্তক্ষেপের মুহূর্তগুলি দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ট্রেলারটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে নির্মাতারা লিখেছেন, “কিংবদন্তির উপক্রম, কর্ণিকার আদি পর্ব… আমাদের পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য। #KantaraChapter1 হলো সেই ভূমি এবং মানুষের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা যারা এই যাত্রা সম্ভব করেছে।”
পরিচালক ঋষভ শেট্টির ভাবনা
যিনি কেবল ছবিতে অভিনয়ই করেননি, যিনি এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটি পরিচালনাও করেছেন সেই ঋষভ শেট্টি ছবির নির্মাণ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি জানান, তিনি চেয়েছিলেন হোম্বালে ফিল্মস (Hombale Films) যেন সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণরূপে জড়িত থাকে। শেট্টি বলেন, “আমি তাদের সাথে ১৫ বারেরও বেশি গল্পের বর্ণনা দিয়েছি এবং তারা প্রতিটি মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। গল্পে কী প্রয়োজন তা বুঝতে তারা আমাকে সাহায্য করেছেন এবং আমার দৃষ্টি অর্জন করতে সমর্থন করেছেন।” তিনি প্রযোজকদের এই ভূমিকার গুরুত্বের উপর জোর দেন, বলেন, প্রযোজকরা কেবল অর্থ নিয়ে চিন্তা করলে এমন একটি প্রকল্প তৈরি করা সম্ভব হতো না।
ভারতীয় সিনেমার অন্যতম বৃহত্তম যুদ্ধ দৃশ্য
‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’-এর অন্যতম আলোচিত দিক হল এর বিশাল আকারের যুদ্ধ দৃশ্য। হোম্বালে ফিল্মস এই দৃশ্যটিকে নজরকাড়া করে তোলার জন্য কোনো প্রচেষ্টা বাকি রাখেনি। এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম এবং সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অ্যাকশন সিকোয়েন্স হিসেবে বিবেচিত।
এই দৃশ্যটি নির্মাণে ৫০০ জনেরও বেশি দক্ষ যোদ্ধা এবং মোট ৩,০০০ লোক জড়িত ছিলেন। প্রায় ২৫ একর কঠিন ভূখণ্ড জুড়ে ৪৫ থেকে ৫০ দিন ধরে এর চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে এর কোরিওগ্রাফি করা হয়েছে।
সৃজনশীল দল ও মুক্তি
ছবিতে রয়েছে একটি প্রতিভাবান সৃজনশীল দল। এর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বি. অজনিশ লোকনাথ, সিনেম্যাটোগ্রাফি করেছেন অরবিন্দ কাশ্যপ, যিনি রুক্ষ ভূদৃশ্য এবং তীব্র অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। প্রযোজনা ডিজাইনার ভিনেশ বাংলা নিশ্চিত করেছেন যে প্রতিটি দৃশ্যই চলচ্চিত্রের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক পটভূমিকে প্রতিফলিত করে।
হোম্বালে ফিল্মস প্রযোজিত ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ ২ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে প্রস্তুত। ছবিটি কন্নড়, হিন্দি, তেলুগু, মালায়ালম, তামিল, বাংলা এবং ইংরেজি সহ একাধিক ভাষায় মুক্তি পাবে।




















