ব্যুরো নিউজ,২২ এপ্রিল: ভারতের প্রধান বিচারপতির (সিজেআই) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে চর্চায় উঠে এসেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু করার আবেদন দায়ের করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার, বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আগামী সপ্তাহেই এই মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হবে।
মমতার খামে রাজনৈতিক কৌশল? দিলীপের দরজায় পৌঁছল নবান্ন!
প্রধান বিচারপতিকে ‘গৃহযুদ্ধের জন্য দায়ী’ বলার অভিযোগ
সম্প্রতি একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিশিকান্ত দুবে বলেন, “দেশে যত গৃহযুদ্ধ হয়েছে, তার জন্য দায়ী দেশের প্রধান বিচারপতি।” এই বক্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাদের মতে, এই মন্তব্য শুধুমাত্র দৃষ্টান্তহীন নয়, এটি সরাসরি দেশের শীর্ষ আদালত এবং বিচারব্যবস্থার মর্যাদাকে চ্যালেঞ্জ করা। এই মন্তব্য ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে।
মোদীর সৌদি সফর শুরু, বৈঠকে নজর প্রতিরক্ষা-বাণিজ্যে
অনেক আইনজীবী আদালত অবমাননা আইনের অধীনে দুবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি)-এর কাছে চিঠি লিখেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত এজি এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। মঙ্গলবার আদালতের শুনানিতে, এক আইনজীবী বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, “এজি এখনও অনুমতি দেননি, অথচ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। এটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এমনকি প্রধান বিচারপতিকে গৃহযুদ্ধের জন্য দায়ী করা হয়েছে।” বিচারপতি গাভাই সঙ্গে সঙ্গে বলেন, “তালিকাভুক্ত করুন আগামী সপ্তাহে।”
এই ঘটনার পেছনে রয়েছে সম্প্রতি ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ। শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের পরই বিতর্কিত ওই আইনের কিছু ধারা কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রেক্ষিতে নিশিকান্ত দুবে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। তবে শুধু দুবে নন, এর আগেও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিচারকদের কোনও জবাবদিহিতা নেই, এবং দেশের আইন তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিচার বিভাগের মধ্যে টানাপোড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেখা যাক, আগামী সপ্তাহে শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট কী পদক্ষেপ নেয়। এই পরিস্থিতি শুধু রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে নয়, দেশের বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও মর্যাদাও প্রশ্নের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে।