লাবনী চৌধুরী, ২৯ ফেব্রুয়ারি: অবশেষে ফাঁদে পড়ল বাঘ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর পুলিশের জালে সন্দেশখালির ‘শের’।
‘বাঘ বন্দী খেলা’
গত ৫৫ দিন ধরে খবরে শিরোনামে সন্দেশখালি। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার-নিপীড়ন, যৌন হেনস্থা, গণ- ধর্ষণ, মারধোর, জমি দখল, ভেড়ি দখলের মত ভুরি ভুরি অভিযোগ। আর এই সকল অভিযোগের বিরুদ্ধে সোচ্চার সেখানকার সাধারন মানুষ। সাধারণের সহ্যের বাধ ভেঙেছে। তাই লাঠি- ঝাঁটা হাতেই পথে নেমেছেন তারা। বারবার একই দাবি তাদের। অত্যাচারীদের শাস্তি চাই, শেখ শাহাজাহানের ফাঁসি চাই…
কিন্তু কোথায় শাহাজাহান? গ্রেফতারির জন্য অন্তত খুঁজে পেতে হবে তার আস্তানা। কিন্তু তার হদিশ কেউ জানেনা। এদিকে শাজাহাজানের ‘টিকি’ খুঁজে বের করতে মরিয়া গোটা সন্দেশখালি। ‘একবার যদি তাকে বাগে পায় তারা, সেদিনই শাজাহাজানের পঞ্চত্ব সুনিশ্চিত’। সত্যজিতের সেই হারা যাবে প্রাণটা। কিন্তু তা আর হল কই?
এদিকে শাহাজাহানের গ্রেফতারিতে সরব হয়েছে শাসক বিরোধী সব রাজনৈতিক দল গুলিই। সকলে এটাই জানতে মরিয়া যে ঠিক কার আঁচলের নিচে গা-ঢাকা দিয়ে ছিল শাহাজাহান? তবে সে অনুমান প্রায় করে ফেলেছে গোটা রাজ্যই। কিন্তু সেই সত্য প্রকাশ্যে আনবে কে? বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? ঠিক সেই সময়েই ‘বোমা’ ফাটালেন এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গতকাল তিনিই জানান যে, ‘মমতার পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে সন্দেশখালির স্কাউন্দ্রেল, তার জন্য ফাইভস্টার ফ্যাসিলিটি’
‘মমতার পুলিশের হেফাজতে শাহজাহান’ বিস্ফোরক শুভেন্দু
The Scoundrel of Sandeshkhali – Seikh Shahjahan is in the safe custody of Mamata Police since 12 am last night. He was taken away from the Bermajur – II Gram Panchayat area, after he managed to negotiate a deal with the Mamata Police, through influential mediators, that he would…
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 28, 2024
আর এই তথ্য ফাঁস করার পর আর কি তাকে লুকিয়ে রাখা যায়? অগত্যা! বাধ্য হয়েই ‘পুলিশমন্ত্রীর’ এই নয়া ‘ছক’। পুলিশের দাবি, মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পলাতক শাহজাহানকে। তাঁকে বসিরহাট আদালতের লক আপে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই তাঁকে বসিরহাট আদালতে তোলা হবে বলে জানান বসিরহাটের এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান। সেই মত তাকে পেশ করা হয় আদালতে।
এদিন শাহজাহানের মামলাটি ‘স্পেশাল কেস’ হিসাবে গণ্য করা হয়। অপররাধমূলক মামলা ২টোর পর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এদিন নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা আগেই মূলত রুদ্ধ-দ্বার আদালত কক্ষেই শুনানি হয় মামলাটির। ১০ মিনিটেই সওয়াল-জবাব পর্ব শেষ হয় আদালতে। শাহজাহানে দুই আইনজীবী রাজা ভৌমিক ও অভিজিৎ ঘোষ জানান, “পুলিশ ১৪ দিন হেফাজত চাইলেও আদালত ১০ দিনেরই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।”
এদিকে দু’দিন আগেই তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ জানান, আগামী ৭ দিনের মধ্যেই শেখ শাহাজাহানকে গ্রেফতার করা হবে। তার এই বক্ত্যব্যের পর রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, যখন শাহাজাহানের হদিশ কেউ জানেনা, তখন কীভাবে তিনি এতো স্পষ্ট ভাবে তার গ্রেফতারির কথা বলতে পারলেন কুনাল ঘোষ? তবে কি তৃণমূল নেতৃত্বই তাকে সকলের ‘লাল চোখ’ থেকে আড়াল করে রেখেছিল? তবে এখনও প্রশ্ন রয়ে গেল তার লুঠেরা অত্যাচারী ভাই শেখ সিরাজকে কেন গ্রেফতার করা হল না? রাজ্যের বিরোধী দল ও সকলেই এবার বলতে শুরু করেছে রাজ্যের সমস্ত সমাজ বিরোধী ও কুখ্যাত ব্যক্তিরা রয়েছে তৃণমূলের ছত্রছায়ায়। ইভিএম নিউজ