ব্যুরো নিউজ ২৬শে আগস্ট ২০২৫ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোমবার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে একটি খসড়া নোটিশ প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ভারতের পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক আরোপের বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
শুল্ক বৃদ্ধির কারণ
এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ইউক্রেন যুদ্ধে ইন্ধন জোগানোর জন্য দায়ী করেছে। তাদের দাবি, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে, যা রাশিয়ার অর্থনীতিকে সাহায্য করছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন, যা এখন বাড়িয়ে ৫০% করা হয়েছে। এই বর্ধিত শুল্ক অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে আমেরিকার যেকোনো বাণিজ্যিক অংশীদারের উপর আরোপিত শুল্কের মধ্যে সর্বোচ্চ।
Donald Trump : ভারতের প্রশ্নের মুখে প্রকাশ মার্কিন রাষ্ট্রপতির অজ্ঞতা , লজ্জাজনক দ্বিচারিতা !
কবে থেকে কার্যকর হবে?
নোটিশে বলা হয়েছে, এই বর্ধিত শুল্ক “২৭ আগস্ট, ২০২৫, সকাল ১২:০১ ইস্টার্ন ডেলাইট টাইম বা তার পরে ব্যবহারের জন্য প্রবেশ করানো বা গুদাম থেকে বের করা” ভারতীয় পণ্যগুলির উপর কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা এই বিষয়ে আপস করতে রাজি নয় এবং ভারতের বিরুদ্ধে তাদের পদক্ষেপগুলি চালিয়ে যাবে।
শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। তারা আশা করছেন যে ক্রেমলিনের তেল রপ্তানিতে আঘাত হানলে তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা শেষ পর্যন্ত পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে বাধ্য করবে। এই শুল্ক আরোপকে সেই কৌশলগত পদক্ষেপেরই অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব
ভারতের পক্ষ থেকে এই শুল্ককে ‘অন্যায্য এবং অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ভারত সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে তারা তাদের জাতীয় স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষা রক্ষায় সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এই শুল্কের কারণে ভারতের রফতানি খাত, বিশেষ করে বস্ত্র, রত্ন ও গহনা, সামুদ্রিক খাদ্য এবং কুটির শিল্পের উপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। তবে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইলেকট্রনিকস পণ্য, যেমন আইফোন, আপাতত এই শুল্কের আওতার বাইরে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শুল্কের কারণে ভারতের প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য প্রভাবিত হতে পারে এবং দেশের জিডিপি বৃদ্ধি কিছুটা কমতে পারে।
Putin : ভারতের স্বার্থ সবার আগে: রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে পুতিন-জয়শঙ্কর বৈঠক
ভবিষ্যৎ পথ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ সত্ত্বেও ভারত সরকার দৃঢ়ভাবে তাদের অবস্থানে রয়েছে। বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী যতীন প্রসাদ বলেছেন যে সরকার কৃষক, শ্রমিক, উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (MSME) সহ সকলের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারতের পক্ষ থেকে বিকল্প বাজার খোঁজা এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এই পরিমাণ আমদানি শুল্কের ফলে , মার্কিন বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুঙ্গে !