US envoy to India Sergio Gor 'Snake'

ব্যুরো নিউজ ২৫শে আগস্ট ২০২৫ : ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী সের্গেই গোরকে ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করেছেন। ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্সিয়াল পার্সোনেল অফিসের ডিরেক্টর হিসেবে গোর ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন বিভাগে প্রায় ৪,০০০ ‘আমেরিকা ফার্স্ট দেশপ্রেমিক’ নিয়োগ করেছেন। ট্রাম্পের মতে, গোর ও তাঁর দল ‘রেকর্ড সময়ে’ এই কাজটি করেছেন, যার ফলে বিভিন্ন দফতর এবং সংস্থা ৯৫%-এর বেশি পূরণ হয়েছে।


কে এই সের্গেই গোর?

১৯৮৬ সালের ৩০ নভেম্বর উজবেকিস্তানের তাসখন্দে জন্ম নেওয়া গোরের আসল পদবি ছিল গোরোখভস্কি। ১৯৯৯ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে আসেন এবং পরে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। তাঁর বাবা ইউরি গোরোখভস্কি একজন এভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন এবং সোভিয়েত সামরিক বাহিনীর জন্য বিমানের নকশা তৈরির কাজ করতেন। গোর ২০০৮ সালে জন ম্যাককেইনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সমর্থন করেছিলেন এবং রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির হয়েও কাজ করেছেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (MAGA) আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন।


Donald Trump : পুতিন-জেলেনস্কি-ট্রাম্প ত্রিমুখী বৈঠকের সম্ভাবনা, যুদ্ধ সমাধানে নতুন পথ খুলল?

মাস্কের সঙ্গে ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক

সের্গেই গোরের সঙ্গে টেসলার সিইও এলন মাস্কের সম্পর্ক একেবারেই ভালো নয়। মাস্ক একসময় গোরকে ‘সাপ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, হাজার হাজার কর্মীর ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষা করার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও গোর নাকি নিজের স্থায়ী সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেননি। এই প্রতিবেদনটি সামনে আসার পর এলন মাস্ক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করে গোরকে ‘সাপ’ বলেছিলেন।


মাস্কের সঙ্গে বিরোধের কারণ

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের মন্ত্রিসভার বৈঠকেও মাস্ক এবং গোরের মধ্যে একাধিকবার মতবিরোধ হয়েছে। এমনকি মাস্ক গোরকে ভর্ৎসনাও করেছিলেন। গোর একবার মাস্কের সহযোগী জ্যারেড আইজ্যাকম্যান, যাকে নাসা (NASA)-তে মনোনীত করা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে একটি ডসিয়ার জমা দিয়েছিলেন। এর ফলে সেই পদক্ষেপটি বাতিল হয়ে যায় এবং মাস্ক অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। এই ঘটনার পরেই মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করেন।


ট্রাম্পের বিশ্বাস ও নতুন দায়িত্ব

যদিও গোরের ভারতে কাজের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তবুও ট্রাম্পের মতে তিনি এমন একজন যাকে তিনি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেন। ট্রাম্প গোরকে একজন ‘মহান বন্ধু’ এবং তাঁর ঐতিহাসিক নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বলে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, “বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলের জন্য, আমার এমন কাউকে দরকার যাকে আমি আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারি এবং যিনি আমাদের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ মিশনে সাহায্য করতে পারবেন।” গোরের নিশ্চিতকরণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্সিয়াল পার্সোনেল অফিসের ডিরেক্টর হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন।

PM Modi : মার্কিন রাষ্ট্রপতির আলাস্কা বৈঠকের আলোচনা এবং নিজের অবস্থান সম্পর্কে মোদীকে অবহিত করল রাষ্ট্রপতি পুতিন ।

উপসংহার

উল্লেখযোগ্য, এই নিয়োগ এমন এক সময়ে এলো যখন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক এবং ট্রাম্প-মোদী বন্ধুত্ব নিম্নগামী। ভারত ও রাশিয়ার ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে, একজন সোভিয়েত পিতার এবং ইসরায়েলি মাতার পুত্রকে এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতির সর্বোচ্চ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে ভারতে দূত হিসেবে পাঠানো , দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই করা হয়েছে। একদিক থেকে আশা করা হচ্ছে যে রাষ্ট্রদূত গোরের মনোভাব ভারতীয় ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মিলে যাবে, অন্যদিকে গোরের ‘সর্প’ অভিপ্রায় একটি আশঙ্কার দিক, বিশেষ করে যখন ভারতের বিরোধিতায় পাক-মার্কিন বন্ধুত্ব সর্বদা সোচ্চার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর