লাবনী চৌধুরী, ৯ ফেব্রুয়ারি: আমাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন’স ডে মানে, ভালোবাসার মানুষটিকে পছন্দসই উপহার দেওয়া, কোনও বড় রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া, সর্বোপরি দুজন-দুজনের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটানো। তবে ভ্যালেন্টাইন’স ডে ট্রেন্ডের জ্বালায় এখন স্বস্তি মেলা ভার। ওইদিন কোনও বড় রেস্টুরেন্টে ঢোকবার জন্য আগে থেকে করে রাখতে হয় টেবিল বুক। তবে তাতেও শান্তি আছে কি? খাওয়া শেষ হলেই ওঠবার তাড়া। পার্ক হোক বা লেকের ধার সর্বত্রই ভিড়ে ঠাসা। তাই শহরের ভিড়-কোলাহল এড়িয়ে নির্জনে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে কাটান ভালোবাসার দিনটি।
ভ্যালেনটাইন’স ডে-তে কি উপহার দেবেন তা নিয়ে চিন্তা? রইল হরেক টিপস
হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত কলকাতা। আর কলকাতার আশেপাশে গোটা একটা দিন কাটানোর জন্য বেশ কিছু পর্যটন স্থানও রয়েছে। তাই ভালোবাসার দিনটি একটু অন্যরকমভাবে কাটাতে হলে বেড়িয়ে পড়ুন কলকাতার বাইরে। গোটা একটা দিন প্রিয় মানুষের সঙ্গে অনায়াসেই কাটাতে পারেন এই জায়গাগুলিতে।
কলকাতা থেকে কমবেশি ৭৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কোলাঘাট। তাই মন চাইলে লং ড্রাইভেও বেড়িয়ে পড়তে পারেন কোলাঘাটের উদ্দেশ্যে। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ নদীর কূলে কোলাঘাট শহরটি। তাই ভালোবাসার দিনে নদীর তীরে দাড়িয়ে মনের মানুষটিকে প্রেম নিবেদনের এমন সুবর্ণ সুযোগ খোয়াবেন না। গোটা একটা দিন গ্রাম্য প্রকৃতির মাঝে কাটাতে হলে চলে আসতেই হবে এখানে। তবে নাওয়া-খাওয়া নিয়েও কোনো অসুবিধা নেই, এখানে নদীর ধারে রয়েছে বেশ কয়েকটি খাওয়ার হোটেল। নদীর জ্যান্ত মাছ, গরম গরম ভাত দিয়ে অনায়াসেই সেরে ফেলতে পারেন দুপুরের ভোজ।
কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ডায়মন্ড হারবার। আর তার একটু দুরেই ছোট্ট শহর রায়চক। এখানেই প্রিয় মানুষের সঙ্গে কাটাতে পারেন প্রেমের দিনটি। আবার চাইলে দিনের দিনই ঘুরে চলে আসতে পারেন। তবে প্রাচীন সময়ে এখানে একটি দুর্গ ছিল, যা আজ পাঁচতারা হোটেল। পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারের জন্য রয়েছে রায়চক জেটি বা পার্শ্ববর্তী নুরপুর জেটি। চাইলে জেটি করেও ঘুরে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ৩০ মিনিটের জন্য খরচ পড়বে ১০ টাকা। আর গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করার সময়টিকেই লাগাতে পারেন কাজে। শীতল হাওয়ার সঙ্গে আপনার মনে প্রেমের উষ্ণতাকে প্রকাশ করার এটাই আদর্শ সময়।
ইছামতি নদীর তীরে অবস্থিত টাকি। কলকাতা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে টাকি শহরটি। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী বিভিন্ন রকম গাছের সমন্বয়ে এখানে একটি ছোট সুন্দরবন তৈরি করা হয়েছে। সেই মিনি সুন্দরবনই হতে পারে আপনার ভালোবাসা উদযাপনের ড্রিম ডেস্টিনেশন। চাইলে নৌকাবিহারও করতে পারেন। ফেরিঘাট থেকে ফেরি করে প্রায় ১২৯ একর জমি নিয়ে গঠিত মাছরাঙ্গা দ্বীপটি ঘুরে নিতে পারবেন। এছাড়াও একটি ভ্যান রিক্সা ভাড়া করে টাকির বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গাগুলি অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন। ইছামতি নদীর ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশ।
অনেক তো হল নদীর পার এবার না হয় ঘুরে আসা যাক সমুদ্র উপকূল থেকে। কলকাতা থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাকদ্বীপের নামখানা আর নামখানা সংলগ্ন বকখালি। বকখালি সমুদ্র সৈকতেই কাটিয়ে ফেলুন এবারের ভ্যালেন্টাইন’স ডে। বিচে বসে ডাবের জল খেতে খেতে খুনসুটি, স্যান্ড আর্ট তৈরি করা, ঝিনুক কুড়নো, এমনকি লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি এসব দেখতে দেখতেই কেটে যাবে গোটা দিনটি। চাইলে ঘুরে নিন হেনরি’স আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জ। এমনকি লঞ্চে করেও ঘুরে নিতে পারেন। সমুদ্রের পাড়ের ঢেউ পেড়িয়ে মাঝ সমুদ্রের নীরবতাও অনেক কথা বলে যাবে। সমুদ্রের কোলে দু’জনে মিলে এবার না হয় ভালোবাসায় হারিয়ে যাবেন। ইভিএম নিউজ