ডাঃ শান্তনু গাঙ্গুলি , সহযোগী প্রভাষক, মালয়েশিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (MMA) , ১৭ অক্টোবর ২০২৫ : সায়াটিকা (Sciatica) কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ, যা শরীরের সবচেয়ে দীর্ঘতম স্নায়ু, অ্যাসোটিক স্নায়ু-তে চাপ পড়ার কারণে সৃষ্টি হয়। মেরুদণ্ডের নিচের অংশে এটি সঙ্কুচিত হতে পারে এবং এর ফলে নিতম্ব থেকে পা পর্যন্ত তীব্র ব্যথা, অসাড়তা বা ঝাঁকুনি সৃষ্টি করে।
সায়াটিকা কেন হয়
এর মূল কারণ হলো স্পাইনাল ডিস্কের অতিরিক্ত চাপ বা ডিস্কের ফাটল সৃষ্টি হওয়া, যা স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে। সায়াটিকার সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে আমাদের সঠিক চিকিৎসা এবং কিছু স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে, যা আমাদের নার্ভ বা স্নায়ুতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রাথমিক উপায়ে ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সায়াটিকা সাধারণত নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ফিজিওথেরাপি ক্ষেত্রে, এই ব্যথা বিশ্রাম, ফিজিওথেরাপি এবং স্টেরয়েড ইনজেকশনের মাধ্যমে কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যে উপশম হয়ে যায়।
চিকিৎসা পদ্ধতি
বিশ্রাম: আরামদায়ক প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফিজিওথেরাপি: পিঠ ও পেটের পেশী শক্তিশালী করার জন্য ব্যায়াম করা যেতে পারে।
ওষুধ: ব্যথা উপশমের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যথানাশক, পেশী শিথিলকরনকারী ওষুধ বা প্রদাহবিরোধী ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
অন্যান্য/যোগ/যোগাযোগ: আক্রান্ত স্থানে অথবা ঠান্ডা সেঁক দিলে ব্যথা কমে যেতে পারে।
অস্ত্রোপচার: খুব বিরল ক্ষেত্রে, যদি অন্য চিকিৎসায় কাজ না হয়, তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
Brain Eating Amoeba : কেরালার পর পশ্চিমবঙ্গেও মস্তিষ্ক-খেকো জীবাণু , সচেতনতার বার্তা
কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত
যদি সায়াটিকার লক্ষণ যেমন – জ্বর, বমি বমি ভাব, তলপেটে ব্যথা, চরম অসাড়তা বা পেশী দুর্বলতা দেখা যায় অথবা প্রস্রাব বা অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। অ্যাসোটিক স্নায়ুটি শরীরের সবচেয়ে দীর্ঘতম স্নায়ু। মেরুদণ্ডের নিচের অংশে এটি সঙ্কুচিত হতে পারে এবং নিতম্ব থেকে পা পর্যন্ত এটি ব্যথা, অসাড়তা বা ঝাঁকুনি সৃষ্টি করতে পারে। সায়াটিকার সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে আমাদের এমন কিছু খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে যা আমাদের নার্ভ বা স্নায়ুতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে।
যেসব খাবার নার্ভ ভালো রাখে:
সবুজ শাকসবজি: ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই স্নায়ুর কার্যকারিতা উন্নত করে।
মাছ (ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড): ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, বিশেষ করে EPA এবং DHA, স্নায়ুর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
ভিটামিন বি১২: স্বাভাবিক স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি হোমোসিস্টিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ফল ও বাদাম: অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এগুলি স্নায়ুর ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং শরীরের অভ্যন্তরে সুরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করে।
কিসমিস: স্নায়ুর দুর্বলতা দূর করতে কিসমিস উপকারী, বিশেষ করে শীতকালে এটি খাওয়া ভালো।
দুধ ও মাখন: গরুর দুধ এবং মাখন স্নায়ুর দুর্বলতা দূর করতে এবং শারীরিক শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
তরুণদের ফুসফুসের সমস্যা বৃদ্ধি।
যেভাবে খাবেন:
- স্যালমন, ম্যাকেরেল বা টুনা মাছের মতো ফ্যাটি মাছ আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন।
- ভিটামিন বি১২ এর জন্য ডিম, দুধ, পনীর এবং মাংস খেতে পারেন।
- বেরি, আপেল এবং বাদামের মতো জিনিস নিয়মিত খান।একটি স্বাস্থ্যকর স্নায়ুতন্ত্রের জন্য পুষ্টিকর ও সঠিক খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।