ব্যুরো নিউজ, ২৯ ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালি একটা দ্বীপ এলাকা। আগে সন্দেশখালি শুনলেই মনে হতো বাঘের রাজ্য সুন্দরবনের একটা অংশ। কতই না সুন্দর সেখানকার প্রকৃতি। সুন্দরী, গরান, গেওর মাঝেই রয়েছে বাঘের ভয়। আর নদীতে ভয় কুমীরের। তবে মনে ভয় থাকলেও বাঘ দেখতে বাঙ্গালী সুন্দরবনে যাবেনা তা কি হয়? তবে এখন যে বাঘের কথা বলব সে বাঘ চতুষ্পদী নয়, দু’পায়েই দিব্যি হেটে চলে বেড়ায় সে। সেই বাঘ মোটর বাইক নিয়ে খেলও দেখায়, বন্দুক হাতে নিয়ে হুমকি দেয়। মজুরি না দিয়ে দিন-মজুরদের জনসমক্ষে লাঠি পেটা করে। সেই বাঘের আতঙ্কেও কাঁপে গোটা এলাকা। তবে এটা দু’পেয়ে বাঘ। সঙ্গে আছে শাবকরাও। রাত হলেই গা ছমছম। এই বুঝি হালুম করে ডাক ছাড়ে সেই বাঘ। আর ডাক ছাড়লেই রক্ষে নেই। রাত-বিরেতে সুন্দরী নধর মেয়ে- বউদের যেতে হবে তার ডেরায়। সারা রাত চলবে তাদের নিয়ে যৌন নিপীড়ন। প্রতিবাদ করলেই দিনের বেলায় তাদের স্বামীদের কপালে জুটতো বেধড়ক মার। মারের চোটে বহু পুরুষী গ্রাম ছাড়া।
প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেল দাউদ ঘনিষ্ঠ ‘কুখ্যাত জঙ্গি’
ঈশপের মনুষ্যেতর প্রাণীদের নিয়ে সেই গল্প আজ সন্দেশখালির মনুষ্যকূলেও সত্য। বনের রাজার ক্ষুধা নিবারণে একেকদিন যেতে হত একেক প্রাণীকে। সেই প্রাণীটিকে দিয়েই হত তার সেদিনের রসনা তৃপ্তি। আর এখানেও সন্দেশখালির ‘বাঘেদের যৌন ক্ষুধা’ মেটাতে একেক রাতে যেতে হত একেক মহিলাকে। কিন্তু মেধা দিয়ে সিংহকে মারার সুচতুর কৌশল করেছিল খরগোশ। তবে সন্দেশখালিতে অত্যাচারিত মহিলা-পুরুষেরা সরাসরি ঐক্য বদ্ধভাবে দেখাচ্ছেন গনরোষ। সেই সিংহ বোকার মতো কুয়োয় লাফ দিয়েছিল। কিন্তু সন্দেশখালির ‘বাঘ’ সম্ভবত বিপুল অর্থ নিয়ে ইডি হানার পরেই ভাগলবা।
এটা যেন ঠিক ঈশপের সেই সিংহ আর খরগোশের গল্পের মত, সেখানে সিংহ বেচারা বুঝতেই পারেনি ছোট্ট খরগোশ কি ফন্দিফিকির করে তাকে জব্দ করতে চেয়েছিল। তাই বুঝতে না পেরে সিংহ ক্রোধ আর হিংসার বসে কুয়োর জলের লাফ মেরে ছিল। তাতেই বেচারা সিংহের পঞ্চত্ব ঘটেছিল। কিন্তু সন্দেশখালীর শেখ শাহজাহান সব বুঝে শুনে শেষ পর্যন্ত নিজেই হেঁটে হেঁটে বাধ্য ছেলে হয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো ধরা দিলেন। আর কোর্ট চত্বরে ঢুকলেন রীতিমতো বুক ফুলিয়ে। তার পেছনে পুলিশ। কে তাকে ঠেকায় ? কারণ তার মাথায় আছে ‘দিদি-ভাইপো’র হাত। তাই এখন নাকি দর কষাকষি করছেন কোথায় থাকবেন? কি কি সুবিধা পাবেন? প্রয়োজনে চিকিৎসার নামে পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ড-এ জায়গা মিলবে তো? ফাইভ স্টার ব্যবস্থা সেখানে। তাই এসব রফা রাজ্য সরকারের সঙ্গে হয়েছে কিনা এখনও জানা নেই কারোর। তবে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে সন্দেশখালি জুড়ে কিন্তু আশঙ্কা আছে বাঘ শাস্তি পাবে আর বাঘের শাগরেদরা সবাই তো ধরা পড়েনি শাস্তিও কি হবে? তাতেই আরও বাড়ছে আশঙ্কা।