police about sandeshkhali

ব্যুরো নিউজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি: বিগত এক দশকেরও বেশি ভগবান নিদ্রা গিয়েছিলেন। সেই ভগবানের দিবা রাত্র গায়ে ছিল পুলিশের উর্দি। পায়ে ভারী বুট জুতো, মাথায় টুপি, কোমরে বন্দুক। মজায় ছিলেন সন্দেশখালি ন্যাজাট এলাকার পুলিশেরা। বহিঃ জগতে যাই হোক এই উর্দি পরা পুলিশ বাবুরা সেখানে দিব্যি ‘সেটিং’ করে নিয়েছিলেন সেখানকার জমি-হাঙ্গর ‘শাজাহাজান শেখ এন্ড কোম্পানি’র সঙ্গে। অতএব আনন্দের আর শেষ নাই। পুলিশ সকাল থেকে বিকেল অব্দি নানা মূল্যবান মাছ ভাজা দিয়ে ঠাণ্ডা ও গরম পানিয়র সঙ্গে দিন অতবাহিত করছিল। আর রাতে মুরগি নিধন যজ্ঞ। আর আরও রাত বাড়লে চলতো ‘নারী-ইজ্জত লুণ্ঠন উৎসব’। বন্দুকের ডগায় এসব চলছে। আর পুলিশ ভারী অদ্ভুদ কৌশল নিয়ে চলছে। অভিযোগ জানাতে গেলেই পুলিশই আবার পাঠাতো সন্দেশখালির সেই ‘ডন’দের কাছে। আবার তারাই জানিয়ে দিত অভিযোগকারিদের নাম। ফলে ‘ডন’দের প্রহারে কারো মৃত্যু হয়েছে, আবার কেউ গ্রাম ছাড়া। কিন্তু পুলিশের কি যায় আসে? মাস মাইনে পাকা। তাতে বোধ হয় হাত পড়ে না। তাই কুম্ভকর্ণের মতো এক দশক নিদ্রায় ছিলেন এই উর্দি পরা গরীব গুর্বোদের  ভগবানেরা। কত রাতে কত মা-বোনেদের ইজ্জত ধুলোয় লুটিয়েছে তার খবর কে রাখে?

১০ লক্ষ দিলেই মন্ত্রী | টোপ হুমায়ুন কবীরকে | গ্রেফতার ‘সাংবাদিক’

Advertisement of Hill 2 Ocean

কিন্তু, তুষের আগুন একদিন যে লেলিহান শিখা-সহ জ্বলে ওঠাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা সেই সহজ সত্য টের পায়নি পুলিশ। কারন, সে রাম নেই, সে অযোধ্যাও নেই। থানা পর্যায়ের পুলিশের সেই লেখা পড়াও নেই, সেই মেধাও নেই। আর সাহস জমা দিয়ে রেখে এসেছিল রাজনৈতিক নেতাদের দরজায়। ফল যা হওয়ায় এখন তাই হচ্ছে। রক্ষাকর্তারা সেদিন ছিলেন ভক্ষক। আর ‘ডন’দের থেকে পেছন পকেটে মোটা রোজগার নিশ্চিত করেছিল তারা। ফলে, উর্দি পরা পুলিশের সন্তান সব আছে দুধে-ভাতে। বিবেক বিসর্জন দিয়ে পুলিশ ‘ডন’দের সব অনাচার প্রশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু, ওই যে পুলিশের কোনও লেখা- পড়া নেই। কারন সত্যজিৎ রায় কবেই বলে গেছেন, অনাচার কর যদি রাজা তবে ছাড়ো গদি। কিন্তু কে শোনে কার কথা! নন্দিগ্রামের মতোই আজ রোষে ফুঁসছে সন্দেশখালি। বাড়ি, ঘর, জমি, ইজ্জত হারিয়ে আজ তারা হাতে নিয়েছেন ঝাঁটা আর লাঠি। কিন্তু, অস্ত্র নেয়নি। আজ তাদের ইজ্জত বাঁচানোর লড়াই। জমি উদ্ধারের লড়াই। সেই লড়াইয়ে এখন কোন ঠাসা রাজ্য সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের তিন বারের ‘ইজারা’ পাওয়া মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ড্যামেজ কন্ট্রোলে এখন পাঠিয়েছেন খোদ ডিজি পুলিশ রাজীব কুমারকে। কিন্তু কেন প্রথমেই শেষ অস্ত্র ছুড়ে দিলেন মমতা? আসলে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর হাতে আর অস্ত্র ছিল না। তা ছাড়া অন্যান্য পুলিশকর্তা যে অবস্থা সামাল দিতে পারেন এমন বিশ্বাসও তার নেই। অগত্যা সেই ‘পুরাতন ভৃত্য’ই ভরসা। কিন্তু, তিনি এসেই সন্দেশখালি জুড়ে আন্দোলনকারীদের প্রতি যতটা সহমর্মীতা দেখিয়েছেন তার চেয়েও বেশি হুমকি দিয়েছেন বিক্ষোভরত মহিলাদের। বলছেন, আইন শৃঙ্খলা ভাঙা যাবে না। কিন্তু রাজ্যবাসীর প্রশ্ন টানা দশক ধরে রাতের পর রাত মহিলাদের ইজ্জত যারা নিয়ে নিল তারা কি আইন অনুসরণকারী অথবা আইনের পূজারি?  অথচ আজ  নির্যাতনের শিকারদের হুমকি দিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের ঘটে শুধুই কি গোবর? কারন জল-জঙ্গল আর কুমির-বাঘের সঙ্গে লড়াই করে স্বনিযুক্ত ওই মহিলা পুরুষেরা রাজীব কুমারদের মতো শহুরে আরামে মানুষ হননি। তাই পুলিশের হুমকি সেখানে ফুৎকারে যে উড়ে যাবে সে ধারনাই নেই ‘করিৎকর্মা’ রাজীব কুমারের। যাকে গ্রেফতার ও শাস্তির জন্য দিবা-রাত্র ছুটে বেড়াচ্ছেন মহিলারা। সেই শেখ শাহাজাহানকে  দিয়েগো মারাদোনা কিংবা আইনস্টাইন অথবা এ পি জে আব্দুল কালাম বা মৌলানা আবুল কালাম আজাদ-এর মতো তুলোয় মুড়ে রেখে দিয়েছেন। তা না হলে তৃণমূল নেতারা কেন বলবেন ৭ দিনে গ্রেফতার বা ১০ দিনে গ্রেফতার অথবা দু’মাসে গ্রেফতার হবেন শাহাজাহান? তাহলে কি তৃণমূলের চিঠি কাঁধে ( পড়ুন সম্পদ কাঁধে) গ্রাম গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন শাহাজাহান। তার মাথায় পিসি-ভাইপোর হাত। কে ধরিবে তাহারে? তাই প্রথম দিন থেকেই চলছে ছল-চাতুরি আর আইনের  প্যাঁচ-পয়জার। আর ন্যায় বিচার সত্যি দেবে কে? তবে সন্দেশখালির মায়েদের চোখের জলের মূল্য দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। ইভিএম নিউজ

 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর