Pictures on the walls of BJP leaders' houses

ব্যুরো নিউজ,২৪ মার্চ: সম্পাদক স্বপন দাস, যেকোনো রাজনৈতিক নেতার তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বোধ ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপরে। একটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বিজেপির সর্বোচ্চ স্তরের প্রাক্তন এবং বর্তমান নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বাংলার বর্তমান নেতাদের বাসভবনের দেওয়াল গুলিতে যে হিন্দু নেতাদের ছবি রয়েছে তাতে তাদের মতাদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে। সেই মতাদর্শের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে আর এস এস এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আর এ থেকেই তৈরি হয়েছে কিছু প্রশ্ন। যে বিজেপির নেতৃত্ব কি তাহলে আরএসএসের মতাদর্শের আনুগত্য বহন করে না? বিজেপির মধ্যে কি হিন্দুত্বের ভাবনার বিভেদ রয়েছে?

ছবি যেখানে কথা বলে

ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব,তিনি ভারতের প্রথম “মিস ইন্ডিয়া”,গর্ভবতী অবস্থায়ও এই খেতাব জয় করেছিলেন! কে তিনি?

এই সমস্ত ছবিগুলোকে বিশ্লেষণ করলে বিজেপি এবং আরএসএস তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়। পাশাপাশি বিজেপির আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক গঠন কাঠামো সম্পর্কে একটা নির্দিষ্ট চেহারা প্রতীয়মান হয়।

পোষ্য কুকুর ঠোটে জিভ দিয়ে চেটে আদর করছে অথবা ক্ষতস্থান চেটে দিচ্ছে!এতে আপনার কোন বিপদ হচ্ছে না তো? কি বলছেন চিকিৎসকরা

দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিত শাহের বৈঠকখানায় দেওয়ালে ঝোলে বিনায়ক দামোদর সাভারকার ও চাণক্যের ছবি। ঘরের টেবিলে থাকে গণেশ মূর্তি বৈঠকখানায় থাকে বজরংবলীর মূর্তি। তার এই ছবি কিংবা মূর্তি নির্বাচনের মধ্যে আরএসএসের ভাবধারার বিরোধিতা না থাকলেও হুবহু মিল নেই। কারণ আরএসএসের পদাধিকারী বা স্বয়ংসেবক কিংবা সংঘের প্রচারক তাদের বাড়িতে ভারত মাতা, হেডগেওয়ার এবং গোলওয়ালকারের ছবি থাকেই । সুতরাং এক্ষেত্রে অমিত শাহর বাড়ির ছবির সঙ্গে আরএসএসের আদর্শগত অমিলের কথা উঠতেই পারে। ঠিক একই রকম ভাবে আটবাণীর সঙ্গেও আরএসএসের অমিল থাকার কথা কেউ বলতেই পারে। কারণ তার বসার ঘরে বংশীধারী রাখাল বালকের মূর্তি থাকে । কিংবা ধরুন মুরলি মনোহর জোশি তার বসার ঘরে কাঁচের বাক্সের মধ্যে থাকে রথের ভাস্কর্য। নীতিন গরকরি ক্ষেত্র একই প্রশ্ন উঠতে পারে। নীতিন গরকরি প্রশিক্ষিত স্বয়ংসেবক। কিন্তু তারও বসার ঘরে, গণপতি বাপ্পার মূর্তি বংশীধারী শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি ও হেডগেওয়ার এর মূর্তি। রাজনাথ সিং এর বসার ঘরে গেলে দেখতে পাবেন চার পায়া কাঁচের টেবিলে শুধুমাত্র গণেশ মূর্তি। আবার নজর যদি বাংলার নেতাদের দিকে দেন তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভার দপ্তরের দেওয়ালে ভারত মাতা রয়েছে কিন্তু সেই ভারত মাতার দুপাশে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ও দীন দয়াল উপাধ্যায়ের ছবি। আর কিছুটা নিচে অটল বিহারী বাজপেয়ির আবক্ষ ছবি। শুভেন্দু অধিকারীর চেয়ারের পেছনের দেওয়ালে শ্যামাপ্রসাদ এবং মোদি। সুকান্ত মজুমদারের বাংলোর যে ঘরটি রয়েছে সেই ঘরের মাঝখানে ভারত মাতা দুপাশে নরেন্দ্র মোদী ও জে পি নাড্ডা। অন্য একটি দেওয়ালে হেডগেওয়ার ও গোলওয়ালকার। তার উল্টো দিকের দেয়ালে অমিত শাহ। দিলীপ ঘোষের বাড়ির দেওয়াল কপি বুক সংঘির মত। দেওয়ালে ডাক্তার জি অর্থাৎ হেডগেওয়ার মাঝখানে ভারত মাতা এবং তার পাশে গুরুজি অর্থাৎ গোলওয়ালকারের ছবি। পাশাপাশি তার বসার ঘরে পদ্ম ফুলের ভাস্কর্য স্বামী বিবেকানন্দের ছবি বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছবি ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের মূর্তি ও দন্ডায়মান ত্রিশূল।

এই সমস্ত ছবিগুলিকে ব্যাখ্যা করে এটা বোঝা যায় যে আরএসএস বিজেপিকে কখনোই সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে না। বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের মতাদর্শের আদান-প্রদান ও ভাবনার আদান প্রদান ঘটে। আর এস এস বিজেপিকে, মার্গ দর্শন দেখায় কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণ করো না। বিজেপির মধ্যে থাকা রাজনৈতিক নেতারা তাদের নিজস্ব হিন্দুত্ব রাজনৈতিক সত্তা নিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। এটা তারই প্রতিফলন। বিজেপি এই বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী চিন্তাকে একটি নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত করেছে। সেই নির্দিষ্ট ধারাটি হল দেশ মাতৃকা সেবা ও সনাতন ধর্মের সংস্কৃতিকে রক্ষা করা বিস্তৃত করা এবং সংস্কার করা। তাই হিন্দুত্ববাদের মধ্যে যে বৈচিত্র্য আছে সেই বৈচিত্র্য গুলোকে আত্মস্থ করে বিজেপি একটি ঐক্য গড়ে তুলেছে তার দলের মধ্যে। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে বিজেপি তার দলের মধ্যেই শতফুল বিকশিত হোক এই গণতান্ত্রিক ভাবনার বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতি অর্থাৎ সনাতন সংস্কৃতি যে মূল ভাবনা বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য সেই ঐক্য গড়ে তোলার কাজে সফল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদেরকে তুলে ধরতে পেরেছেন।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর