ব্যুরো নিউজ,২৪ এপ্রিল: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর নৃশংস হামলার ঘটনার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করল। বুধবার রাতেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে পাঁচটি দফায় পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছিল। তার ঠিক পরদিন, বৃহস্পতিবার সকালে আরও একটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়— ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয় পাকিস্তানের সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
সন্ত্রাসবাদে মদতের জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের শক্ত প্রতিক্রিয়া
বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবন ৭, লোককল্যাণ মার্গে অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির (সিসিএস) জরুরি বৈঠক। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকের শেষে রাত ৯টা নাগাদ বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সাংবাদিক সম্মেলনে পাঁচটি বড় পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন। বিদেশসচিব জানান, যতদিন না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করছে, ততদিন সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত থাকবে। ভারত পাক সীমান্তের আটারি-ওয়াঘা করিডরের চলাচলও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি, যাঁরা বৈধ কাগজপত্র নিয়ে এই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের ১ মে-র মধ্যে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তালিকায় রয়েছে ‘সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প’ (SVES)-এর অধীনে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা। আগে যারা এই ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, তাঁদের অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে। এমনকী, এই ভিসা সুবিধার অধীনে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত পাক নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে বলে জানানো হয়েছে। আরও কড়া পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ (persona non grata) ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাক দূতাবাসের কর্মীসংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
এই পাঁচ সিদ্ধান্তের রেশ কাটার আগেই বৃহস্পতিবার সকালে সরকার নিয়েছে আরও একটি কড়া পদক্ষেপ— ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের সরকারি এক্স অ্যাকাউন্ট। এর ফলে ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের ডিজিটাল প্রচার কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল। কেন্দ্রের এই ছয় দফা পদক্ষেপে স্পষ্ট, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সন্ত্রাসবাদে তাদের ভূমিকায় পরিবর্তনের উপর। সরকারের এই দৃঢ় অবস্থান বার্তা দিচ্ছে— সন্ত্রাসবাদকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না ভারত।