ব্যুরো নিউজ,১৮ নভেম্বর:কসবা, রাজডাঙা ও ইন্দু পার্ক সহ দক্ষিণ কলকাতার একাধিক এলাকায় শাসকদলের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চলছে অবৈধ কর্মকাণ্ড। অভিযোগ, এই অঞ্চলে প্রায়ই রাজনৈতিক গণ্ডগোল হয়, যেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, বোমাবাজি এবং খুনের মত ঘটনা ঘটে। তবে, এসবের মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ সব জানার পরেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকে। তাতে, টাকা ও ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য চলে সন্ত্রাসের সিন্ডিকেট রাজ।কসবা এলাকার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টার পর আবারও সামনে এসেছে এই এলাকায় শাসকদলের দুই পক্ষের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই। অভিযোগ, এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে সুশান্ত ঘোষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছিল। সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর, তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও এই নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, স্থানীয়রা মনে করছেন, টাকা তোলার এবং ক্ষমতা বজায় রাখার লড়াইয়ের কারণে সুশান্তকে সরানো হয়েছিল।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলাঃ মহম্মদ ইউনুসের দাবি, ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক কারণ
প্রশাসনের নীরব ভূমিকা
পুলিশ সূত্রে খবর, কসবা, রাজডাঙা, ইন্দু পার্কে সুশান্তের একচ্ছত্র প্রভাব ছিল। তবে, শাসকদলের ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ যত ভাগ হয়ে যায়, ততই সেখানে অপর পক্ষের উত্থান শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে সুশান্তকে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি হিসেবে তার জনপ্রিয়তা কমে যায়। তবে, তিনি নিজের কেন্দ্র ছাড়লেও, রাজনৈতিক ক্ষমতা হারাননি। সুশান্ত নিজেই বলেছেন, ‘আমার বাড়ি ১০৭ নম্বরে, এখানকার লোকজন নানা বিষয়ে আলোচনা করতে আসে, আমাকে তো মানুষদের কথা শুনতেই হবে।’ এছাড়া, কসবা ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান টাকার লড়াইয়ের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়রা জানান, এই এলাকায় গত ১০ বছরে সবচেয়ে বেশি সরকারি জমি বিক্রি ও হাতবদলের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, বেআইনি নির্মাণ কাজও চলছে, থামানোর নাম নেই। স্থানীয়রা দাবি করেন, এখানে সরকারি জমি অবৈধভাবে বেচাকেনা হচ্ছে, আর এর সঙ্গেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। গুলশন কলোনি ও মার্টিনপাড়া এলাকায় বেআইনি নির্মাণের অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে সরকারি জলাভূমির অংশ ভরাট করে বহুতল নির্মাণ হচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে বড় সাফল্যঃ ডাকাতির ছক বানচাল, ১৩ দুষ্কৃতী গ্রেফতার
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কাজের পিছনে রয়েছে শাসকদলের কিছু নেতাদের মদত, যারা এই অবৈধ কাজের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছেন। এমনকি, এখানে টাকা না পেলে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়। এক বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ‘এখানে টাকা ওড়ানো হয়, টাকা ধরতে না পারলেই ঝামেলা।’ তাদের মতে, এই সব কর্মকাণ্ড প্রশাসনের মদতেই হয়ে থাকে এবং এর পেছনে রাজনৈতিক শক্তির হাত রয়েছে।এটি পরিষ্কার যে, কসবা, রাজডাঙা এবং ইন্দু পার্কের মতো এলাকায় টাকা, ক্ষমতা এবং সন্ত্রাসের লড়াই এখন রীতিমতো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর পুলিশ-প্রশাসনের নীরব ভূমিকা এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে।