FRBM আইন

ব্যুরো নিউজ,৩০ জানুয়ারি :FRBM (Fiscal Responsibility and Budget Management) আইন হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন যা সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এবং তার ঘাটতি ও পাবলিক ঋণ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল। ২০০৩ সালে এই আইনটি কার্যকর হয়, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারের ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি, এবং মোট ঋণকে দেশের জিডিপির একটি নির্দিষ্ট শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা। এই আইনটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মকে অতিরিক্ত ঋণের বোঝা থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে।এফআরবিএম আইনটিকে আপনি সরকারের আর্থিক “ফিটনেস ট্র্যাকার” হিসেবে ভাবতে পারেন, যা নিশ্চিত করে যে সরকার অতিরিক্ত খরচ না করে সংকটকালীন মুহূর্তেও জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বাজেট পূর্বানুমান (BE) এবং সংশোধিত অনুমান (RE)ঃ কীভাবে এগুলি সরকারের আর্থিক পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করে?

FRBM আইন কেন প্রবর্তিত হয়েছিল?

ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ২০০০ সালের গোড়ার দিকে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, সরকারের রাজস্ব ঘাটতি এক অনিয়ন্ত্রিত স্তরে চলে যাচ্ছিল, যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছিল। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য FRBM আইনটি প্রবর্তিত হয়েছিল যাতে সরকারের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং একটি সুসংহত অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখা যায়।

FRBM আইন আপনার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

১. স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সাহায্য করার ফলে দেশব্যাপী স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। এর ফলে ব্যবসা এবং ব্যক্তিদের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়মিতভাবে হয়।

২. কম ট্যাক্স: সরকার যখন তার বাজেট ও ঘাটতি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে, তখন ঋণ গ্রহণের প্রয়োজন কমে যায়, যার ফলে ভবিষ্যতে ট্যাক্সের হার কম হতে পারে।

৩. জনসেবা খাতে অধিক বিনিয়োগ: যখন সরকার তার আর্থিক অবস্থা সুসংহত রাখে, তখন সে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবায় বেশি বিনিয়োগ করতে পারে।

খাদ্য সংকটের কবলে দেশ, দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ খাবার খেতে পান না, রাজনৈতিক দাবি কি শুধু ফাঁকা বুলি?

FRBM আইন বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ

১. বৃদ্ধি ও শৃঙ্খলার মধ্যে ভারসাম্য: কঠোর ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মসূচির জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যখন অর্থনীতি ধীরগতিতে চলে।

২. ঘনঘন অতিক্রম: কোভিড-১৯ মহামারীর মতো সংকটকালীন পরিস্থিতিতে সরকার অনেক সময় এই আইন থেকে মুক্তি পেতে “এস্কেপ ক্লজ” ব্যবহার করেছে, যার ফলে লক্ষ্য অর্জনে বিলম্ব ঘটে।

৩. রাজ্য স্তরের সহযোগিতা: রাজ্যগুলিরও আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইন রয়েছে, কিন্তু তাদের এসব আইনের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ভিন্ন, যার ফলে সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়তে পারে।

মোদী-ট্রাম্পের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ঃ শুল্ক, প্রতিরক্ষা ও ভূরাজনৈতিক চাপ

বাজেটে কি দেখবেন?

১. ঘাটতির লক্ষ্য: দেখুন, সরকার কি FRBM-এ নির্ধারিত সীমার মধ্যে ঘাটতি রাখছে, নাকি বিশেষ পরিস্থিতির কারণে সেখান থেকে বিচ্যুত হচ্ছে।

২. প্রগ্রেস রিপোর্ট: সরকারের রাজস্ব এবং আর্থিক ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন দেখতে পারবেন।

৩. ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা: সরকার কি তার ঋণ কমাচ্ছে সুষ্ঠুভাবে, নাকি অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণের ওপর নির্ভর করছে, তা লক্ষ্য রাখুন।

FRBM আইনের মূল বৈশিষ্ট্য

১. ঘাটতি লক্ষ্য: এই আইনের মাধ্যমে সরকারকে তার আর্থিক ঘাটতিকে দেশের জিডিপির একটি নির্দিষ্ট শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, এটি সাধারণত ৩ শতাংশের মধ্যে রাখতে বলা হয়।

২. রাজস্ব ঘাটতি কমানো: সরকারের উদ্দেশ্য হলো রাজস্ব ঘাটতি কমানো এবং অযথা খরচ হ্রাস করা, যাতে ঋণ নিয়ে আয় না করতে হয়।

৩. স্বচ্ছতার নির্দেশনা: সরকারের প্রতি বছর পরিকল্পনা ও অগ্রগতি সম্পর্কে সংসদে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রদান করতে হয়, যা তার কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

৪. এস্কেপ ক্লজ: এই আইনে এমন একটি শর্ত রাখা হয়েছে যাতে জরুরি অবস্থায় (যেমন যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ) সরকারের জন্য ঘাটতি লক্ষ্য পরিবর্তন করা সম্ভব হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর