ব্যুরো নিউজ,২১ এপ্রিল: হুগলির ডানকুনিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের সময় থেকেই কানাঘুষো শুরু হয়েছিল। আর এখন, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই গুঞ্জন রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য বিতর্কে। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন মুর্শিদাবাদের এক মহিলা সিপিএম নেত্রী। ঘটনাটি সামনে আসার পর সমাজমাধ্যমে একের পর এক স্ক্রিনশট, অডিয়ো ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে, যা ঘি ঢেলেছে আগুনে।
নেত্রী মুখ খুলতেই সরগরম বাম শিবির
অভিযোগকারিণী নেত্রী জানান, ফেসবুকে তাঁর বিভিন্ন পোস্টে প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপালের মন্তব্যে তিনি প্রথমে আপ্লুত হয়েছিলেন। একজন সাধারণ কর্মীর কাছে এমন মনোযোগ সম্মানজনক বলে মনে হলেও, সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। অভিযোগ, পরবর্তী সময়ে বংশগোপাল মেসেঞ্জারে অশ্লীল বার্তা পাঠাতে শুরু করেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর পেয়ে সেখানেও একই আচরণ করেন। নেত্রীর দাবি, গত নভেম্বরেই তিনি দলের জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানান। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, “আমি একজন সাংবাদিকও। তাই সব কিছু বুঝে ও পরিকল্পনা করেই এগিয়েছিলাম।”
মমতার খামে রাজনৈতিক কৌশল? দিলীপের দরজায় পৌঁছল নবান্ন!
অন্যদিকে, বংশগোপালের দাবি, গোটা ঘটনাটি একটি ‘ষড়যন্ত্র’। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে একটি লবি কাজ করছে, যারা আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে।” অভিযোগকারিণী নাকি তাঁর কাছে বিশেষ কিছু ‘সুবিধা’ চেয়েছিলেন, যা না পাওয়ার জন্যই এই অভিযোগ আনা হয়েছে— এমনটাই দাবি প্রাক্তন সাংসদের। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির অধীনে রয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, রাজ্য কমিটির এক নতুন সদস্যের বিরুদ্ধেও সমাজমাধ্যমে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। দলের মধ্যেই উঠেছে ক্ষোভের সুর— কী ভাবে এমন কাউকে শীর্ষ নেতৃত্বে নিয়ে আসা হল, যার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা বিতর্ক? দলীয় মহলে প্রশ্ন উঠছে— শুধু অভিযুক্ত নয়, যাঁরা সব জেনেও চুপ করে রয়েছেন, তাঁরাও কি দায় এড়াতে পারেন? এক শীর্ষ সিপিএম নেতা মন্তব্য করেছেন, “আমাদের আর ভোট নেই, কিন্তু বিতর্কের শেষও নেই।” এই ঘটনাগুলি শুধু দলীয় কাঠামোর ভিত নাড়িয়ে দেয়নি, বরং সমাজের বৃহত্তর স্তরে নারীর নিরাপত্তা, সম্মান ও ন্যায়বিচার নিয়েও এক গভীর প্রশ্ন তুলে দিল।