সংবিধান দিবসে রাজনৈতিক উত্তাপ

ব্যুরো নিউজ,২৭ নভেম্বর:সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের প্রস্তাবনায় “সমাজতন্ত্রী” ও “ধর্মনিরপেক্ষ” শব্দের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ওঠা আপত্তি খারিজ করেছে। এর পর ২৬ নভেম্বর ‘সংবিধান দিবস’-এর অনুষ্ঠানে পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সংবিধানকে “জীবন্ত ও প্রগতিশীল” দলিল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় সংবিধান হল সজীব এবং প্রগতিশীল, যা সমাজের পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নতুন ভাবনা গ্রহণ করতে সক্ষম।’ অপরদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তার রাজ্যে বসে এক মন্তব্য করেন, যা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বি আর অম্বেডকরের নেতৃত্বে যে সংবিধান রচিত হয়েছিল, তাতে ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রী শব্দ ছিল না। জরুরি অবস্থার সময়ে কংগ্রেস এই শব্দগুলো সংবিধানে যুক্ত করেছিল, যা সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছিল।’ তার এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন যোগী।

কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ

গৌতম বুদ্ধের চিন্তা


সংবিধান দিবসের এই অনুষ্ঠানটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি, লোকসভার স্পিকার, এবং সংসদের বিরোধী নেতারা একত্রিত হয়ে দেশ পরিচালনায় সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন। রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন, ‘সংবিধান প্রণেতারা এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন যা সময়ের সঙ্গে নতুন চিন্তা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে না।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সংবিধান আমাদের জন্য এমন এক প্রণালি তৈরি করেছে যা দেশের স্বার্থের ঊর্ধ্বে।’ এই অনুষ্ঠানে, যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কংগ্রেসের দাবি, এমন একটি সময়ে জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তোলা উচিত ছিল না। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীই যেহেতু সংবিধান দিবসে উপস্থিত ছিলেন, তাই এই অনুষ্ঠানটি তাকে করতেই হতো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী কি সত্যিই সংবিধান পড়েছেন?’ রাহুলের মতে, ‘সংবিধান ভারতের হাজার বছরের প্রজ্ঞার ফল। এতে মহাত্মা গান্ধী, ড অম্বেডকর, জ্যোতিবা ফুলে, গৌতম বুদ্ধের চিন্তা রয়েছে, কিন্তু সাভারকারের চিন্তা এতে নেই।’

প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিবিআই হেফাজত: জামিনের পর গ্রেফতার

রাহুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তারা একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, যেখানে দেখা যায়, রাষ্ট্রপতির সামনে রাহুল বসে আছেন। যদিও পরে তিনি উঠে দাঁড়ান। এছাড়া, অনুষ্ঠান শেষে রাহুলকে রাষ্ট্রপতির নমস্কার গ্রহণের সময়ে মঞ্চের সিঁড়ি বেয়ে নেমে যেতে দেখা যায়, যা বিজেপির পক্ষ থেকে রাজনীতির খেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কংগ্রেসের মতে, এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণীত অভিযোগ।তবে এই অনুষ্ঠানটি রাজনীতির বাইরেও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা এবং দেশের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ ছিল। রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেও দেশের সংবিধান ও তার চেতনার প্রতি সম্মান জানানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর