ব্যুরো নিউজ,২৩ ফেব্রুয়ারি :‘ছাবা’ সিনেমাটি পরিচালক লক্ষ্মণ উতরেকরের হাত ধরে তৈরি হলেও, এটি পুরোপুরি অভিনেতা ভিকি কৌশলের ছবি। মারাঠি ভাষায় প্রকাশিত এক উপন্যাসের ভিত্তিতে নির্মিত এই সিনেমাটি শিবাজি মহারাজের ছেলে সম্ভাজি মহারাজের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কাহিনি তুলে ধরে। যদিও ছবির চিত্রনাট্য রায়গড়, নাসিক, পুণের মতো স্থানে ঘুরে বেরিয়েছে, মূলত এটি ভিকি কৌশল ও তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে এক সেরা মুভি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভারতে ভোটের হার বাড়াতে আমেরিকার ১৮২ কোটি টাকার অনুদান নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
মহারাজের যুদ্ধ ও বীরত্ব
এই ছবির গল্প মোঘল রাজা ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মারাঠি রাজা শিবাজি মহারাজের ছেলে সম্ভাজি মহারাজের যুদ্ধ ও বীরত্ব নিয়ে। এই সিনেমার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হল সম্ভাজির চরিত্রে ভিকি কৌশলের অভিনয়। তাঁর বাচিক এবং শারীরিক অভিনয় সবার মন জয় করেছে। বিশেষত, সিনেমায় শিবাজি মহারাজের নাম উঠে এসে মারাঠি জাতির প্রাণপ্রশ্বাস হিসেবে রয়ে গেছে। যদিও তিনি সিনেমায় উপস্থিত নন, তবে তাঁর নাম প্রতিটি দৃশ্যে উচ্চারিত হয়।সপ্তদশ শতকে সম্ভাজি মহারাজ মোঘলদের দাসত্ব মেনে না নিয়ে মারাঠা রাজ্য রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন। দিল্লিতে তখন ঔরঙ্গজেবের শাসন চলছে। সম্ভাজি তার অনুগত সৈন্য ও সেনাপতি হাম্বিররাওয়ের নেতৃত্বে নানা ধরনের গেরিলা যুদ্ধের কৌশল প্রয়োগ করে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। তবে, সিনেমার বিশেষ দিক হল সেই গেরিলা যুদ্ধের দৃশ্যগুলির অত্যন্ত নিখুঁত চিত্রায়ন।
বিশেষ করে সিনেমার শেষের দিকে পুণের কাছে ভীম নদীর তীরে সম্ভাজি ও ঔরঙ্গজেবের মধ্যে এক মহাযুদ্ধের দৃশ্য চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই যুদ্ধে, সম্ভাজি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত একাই শতাধিক মোঘল সৈন্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। এই দৃশ্যটির মধ্যে যে সাহস এবং অমানবিক যুদ্ধ ছিল, সেটি ছবির দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।ভিকি কৌশল ছাড়া আর একজন উল্লেখযোগ্য অভিনেতা হলেন অক্ষয় খান্না, যিনি ঔরঙ্গজেবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যদিও নেগেটিভ রোল হিসেবে তার চরিত্র সীমাবদ্ধ ছিল, তবুও তিনি খুব ভালোভাবে চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন। আশুতোষ রানা এবং বিনীত সিংয়ের চরিত্রও প্রশংসনীয়। সম্ভাজির স্ত্রীর চরিত্রে রশ্মিকা মন্দানার অভিনয়ও বেশ মনোযোগী ছিল।
ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য আমেরিকার ১৮২ কোটি টাকার অনুদান প্রসঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য
এছাড়া, ছবির কারিগরি দিকও উল্লেখযোগ্য। আউটডোর শুটিংয়ের বেশিরভাগ অংশ পুণের পার্শ্ববর্তী একটি মিলিটারি গ্রামে হয়েছে। সপ্তদশ শতকের পরিবেশ তুলে ধরতে সুব্রত চক্রবর্তী এবং অমিত রায় যে কাজ করেছেন তা প্রশংসনীয়। পোশাক-পরিচ্ছদের ভার শীতল শর্মার ওপর ছিল, যিনি মারাঠি ও মুঘল যুগের সাজপোশাক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে তৈরি করেছেন। সুতরাং, সিনেমার পরিবেশ এবং দৃশ্যের সাজ-পোশাকও দর্শকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।এছাড়া, এ আর রহমানের সুর এবং গানও সিনেমার সঙ্গে সুন্দরভাবে মিশেছে, বিশেষত ‘জানে তু’ গানটি। তবে, সিনেমার সম্পাদনায় কিছুটা কাটছাঁট হলে প্রথম পর্বটি আরও মসৃণ হতে পারত।সব মিলিয়ে, ‘ছাবা’ একটি ঐতিহাসিক সিনেমা যা ভিকি কৌশলের শক্তিশালী অভিনয় এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যপটের মাধ্যমে দর্শকদের মনে এক অমোঘ ছাপ রেখে যাবে।