ব্যুরো নিউজ ১১ জুন : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসক নিগ্রহ ও মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্ট জমা পড়ল মঙ্গলবার শিয়ালদা আদালতে। তবে এই রিপোর্টে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্যাতিতা তরুণীর পরিবার এবং তাঁদের আইনজীবী। তদন্তে স্বচ্ছতা ও অগ্রগতির অভাবের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদালতও সিবিআইয়ের ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে।
তদন্তে অগ্রগতির অভাব নিয়ে পরিবারের আইনজীবীর উদ্বেগ
আদালতের কার্যক্রমে পরিবারের আইনজীবী সিবিআইয়ের তদন্ত পদ্ধতির প্রতি তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, সিবিআই কেবল পুরনো স্টেটাস রিপোর্টগুলিই পুনরায় জমা দিয়েছে এবং তদন্তে কোনো নতুন অগ্রগতি হয়নি। আইনজীবী বলেন, “কেবল পুরনো স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষা করা হয়েছে – মৃত্যুর আগে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
আটক দুই অভিযুক্তের ভবিষ্যৎ এবং প্রমাণের অভাব
ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে ৯০ দিন ধরে কোনো স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়াই আটক রাখা নিয়েও আইনজীবী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না থাকে, তাহলে কেন তাদের আটক করা হয়েছিল?” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্টগুলি কেবল পূর্ববর্তী তথ্যের পুনরাবৃত্তি করেছে, কোনো নতুন তথ্য প্রদান করেনি।
আদালতের কড়া নির্দেশ এবং অগ্রাধিকারের প্রয়োজনীয়তা
সিবিআইয়ের ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করে শিয়ালদা আদালত জরুরি ভিত্তিতে মামলার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। আদালত মন্তব্য করে যে, কেবল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা যথেষ্ট নয়। একজন সরকারি চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে; এই মামলাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। আদালত সিবিআইকে আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে পরবর্তী স্টেটাস রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে, এবং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এরপর আর কোনো বিলম্ব সহ্য করা হবে না।
বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারের পোস্টার অভিযান: ‘প্রতিটি শিশুই বিশেষ’
পারিবারিক হতাশা এবং সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মাও তদন্তের ধীর গতি নিয়ে তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। মা প্রশ্ন তুলেছেন, এত গুরুতর একটি ঘটনা, যা প্রাতিষ্ঠানিক ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়, সেখানে কেন সিবিআই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে থাকা সত্ত্বেও, অজানা কারণে সিবিআই এই বিষয়ে নিষ্ক্রিয় রয়েছে।
উপসংহার: আরজি কর কাণ্ডের এই ঘটনা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সিবিআইয়ের তদন্তে পরিবারের অসন্তোষ এবং আদালতের কড়া নির্দেশ এই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করেছে। ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে সিবিআই কী নতুন তথ্য পেশ করে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের তৎপরতায় , দ্রুত তরুণীর শবদাহ তদন্ত প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি প্রভাবিত করেছে এবং গোটা তদন্ত তথ্য প্রমান লোপাটের দরুন ভুগছে – এই তদন্তের প্রকৃত নিস্পত্তি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া অসম্ভব ।