ব্যুরো নিউজ, ২৫ ফেব্রুয়ারি:গোলাপি চুল, গোলাপি পোশাক, নীল আইশ্যাডো, গোলাপি ঠোঁট, এবং নানা রঙের পাথরের গয়না— এমন এক অনন্য সাজে কলকাতার রাস্তায় হেঁটে চলেছেন এক অশীতিপর ‘তরুণী’। তিনি হলেন জ়্যান্ড্রা রোড্স, যিনি এক সময় রাজকুমারী ডায়ানার পোশাকশিল্পী ছিলেন। তাঁর সাজে গোলাপির আধিক্য, কিন্তু সেই সাজে একটা আলাদা ধরনের ছন্দও রয়েছে। কলকাতার রাস্তায় এই সাজে হেঁটে চলতে চলতেই তিনি বললেন, ‘‘গোলাপি এখনকার নেভি ব্লু, সব জায়গায় পরা যায়। যেমন করে পরবেন, তেমনই ভাল লাগবে।’’
ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং পোশাকশিল্পের ইতিহাস
জ়্যান্ড্রা রোড্স সাজের জগৎ ভালো করে জানেন, এবং সেই জগত তাঁকে সম্মান দিয়ে মাথায় তুলে রাখে, তাই তার কথার একটা আলাদা শক্তি আছে। কলকাতায় তার উপস্থিতি একদম নিঃশব্দ। এখানে তিনি কোনো হইচই চান না। এমনকি কলকাতায় এসে এভাবে বেড়াতে যাওয়ার সময়ও কেউ জানে না যে, তিনি এককালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের সাজিয়েছেন, এবং ডায়ানার পোশাকশিল্পী ছিলেন। তাঁর কাজের ব্যাপ্তি শুধু রাজপরিবার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি পৃথিবীজুড়ে বলিউড, হলিউড, এবং আন্তর্জাতিক তারকাদের জন্যও সাজ তৈরি করেছেন।
জ়্যান্ড্রা রোড্স পেশাগত জীবনে ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং পোশাকশিল্পের ইতিহাস গড়ছেন। গত ৫৫ বছর ধরে তিনি এই শিল্পে কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি, লন্ডনের ‘ফ্যাশন অ্যান্ড টেক্সটাইল মিউজিয়াম’-এ তিনি তার এই দীর্ঘ যাত্রার ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য একটি সংগ্রহ তৈরি করেছেন। কলকাতায় এসে মিউজিয়াম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘এখন অনেকেই আমার মিউজিয়াম সম্পর্কে জানেন। আমি সবসময় ফ্যাশনের গল্প বলতে ভালোবাসি।’’কলকাতা শহরটি দেখে তার চোখে নতুন উৎসাহ জাগে। তিনি জানালেন, শহরের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং তার রঙে পূর্ণ জীবন দেখে তিনি মুগ্ধ। কলকাতার পুরনো গোরস্থানে গিয়ে বন্ধুর সঙ্গে ইতিহাসের সন্ধান নিয়েছেন তিনি। শহরের এই ইতিহাস এবং তার বর্তমান রূপ সম্পর্কে জানার জন্য তিনি বেশ আগ্রহী ছিলেন।
পাঁচ পাঁচটি কিডনি রয়েছে দেহে কিভাবে বেঁচে আছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই বিজ্ঞানী
এক সময় জ়্যান্ড্রা শাড়ি ডিজাইন করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি প্রথম শাড়ি ডিজাইন করেছিলেন এবং সেগুলোর প্রদর্শনীও করেছিলেন। এখন, কলকাতায় এসে এক সাংবাদিকের পোশাক দেখে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘এখনকার সাজ-গোজ একদম বদলে গেছে। কিন্তু আগে, মহিলাদের শাড়ি পরতে দেখতাম, সেটা অনেক সুন্দর ছিল।’’শিল্পী হিসেবে, জ়্যান্ড্রা শহরের সংস্কৃতি এবং শিল্প দেখে আনন্দিত। তাঁর বন্ধু, ইংরেজ ভাস্কর অ্যান্ড্রু লোগান, তাকে শোভিত করেছে তার তৈরি কাচ এবং পাথরের গয়নায়। তিনি বলেন, ‘‘এগুলো আমি বলি ‘ওয়্যারেবল আর্ট’, অর্থাৎ যা পরা যায়, সেটাই শিল্প।’’এভাবেই নিজের শিল্প জগতের ইতিহাস বয়ে বেড়াচ্ছেন জ়্যান্ড্রা, যিনি এখনও নিজের কাজের মাধ্যমে ফ্যাশন এবং শিল্পের ভবিষ্যৎ রচনা করে চলেছেন।