ব্যুরো নিউজ,৩ ফেব্রুয়ারি:বাংলাদেশে আয় ও সম্পদের বৈষম্য কমানোর জন্য ধনীদের উপর আরও বেশি কর চাপানোর সুপারিশ করেছে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত টাস্ক ফোর্স। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে, এই প্রস্তাবটি দেশের ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ রয়েছে দেশের মুষ্টিমেয় ধনীদের হাতে। ওই বছর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে জাতীয় আয়ের ৪১ শতাংশ, অথচ সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে মাত্র ১.৩১ শতাংশ।
বাজেটে MSME খাতে বড় ঘোষণাঃ ৪ কোটি পশ্চিমবঙ্গবাসী উপকৃত হবে
অন্তর্বর্তী সরকার
২০২২ সালের ৫ অগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তিন দিনের মাথায় গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয় মহাম্মদ ইউনূসকে। ইউনূস সরকারের অধীনে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন এবং সুস্থায়ী উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা খুঁজে বের করা। গত বৃহস্পতিবার এই টাস্ক ফোর্স তাদের সুপারিশসহ একটি রিপোর্ট ইউনূসের কাছে জমা দেয়। ওই রিপোর্টে একটি প্রগতিশীল করব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে ধনীদের উপর বেশি কর চাপানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় জমানায় ট্রাম্পের দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে সতর্কতাঃ আর্থিক সাহায্য বন্ধের হুঁশিয়ারি
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, সম্পদ এবং উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের উপর সম্পদ কর চাপানো উচিত, যা দেশের কিছু ধনী শ্রেণির মানুষের হাতে বেশি সম্পদ চলে যাওয়ার প্রবণতা আটকাতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে কর ফাঁকি রোধ করার বিষয়েও আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ১১ লাখ মানুষ কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) পেয়েছেন, কিন্তু রিটার্ন জমা দেন মাত্র ৪০ লাখ, যা মোট করদাতার মাত্র ২ শতাংশ।
টাস্ক ফোর্সের প্রধান কেএস মুরশিদ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বৈষম্য দূর করতে একটি প্রগতিশীল করব্যবস্থা চালু করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ কর দিতে চান না, তাই সরকার সহজে কর আদায় করতে কিছু নির্দিষ্ট খাতে কর বসিয়ে দেয়। এর মধ্যে ভ্যাটের উদাহরণ দিয়েছেন তিনি, যেখানে ধনী-গরিব সকলকে সমান হারে কর দিতে হয়। এর ফলে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়ে। তাই একটি সমতাভিত্তিক করব্যবস্থা চালু করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন টাস্ক ফোর্সের প্রধান।