ব্যুরো নিউজ, ১১ জুলাই: বামফ্রন্ট জমানায় সিপিএম এর অপারেশন সানশাইনকে নতুনভাবে ফের ফিরিয়ে আনেন তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনোরকম পরিকল্পনা ছাড়াই ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই পুলিশ প্রশাসন একেবারে বুলডোজার নিয়ে লাইন দিয়ে সমস্ত গরিব মানুষের দোকানপাট ভাঙতে শুরু করেন। যারা সত্যিকারের হকার, যার উপরে নির্ভর করেই রুটিরুজি চলে, তাদের দিকটা না ভেবে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী উপলব্ধি করতে পেরেই নির্দেশ দেন, আপাতত বুলডোজার চালিয়ে উচ্ছেদ বন্ধ থাকবে। এক মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে সমীক্ষা করে ফুটপাত থেকে ধীরে ধীরে নিয়ম অনুযায়ী হকার সরাতে হবে। যাদের প্রয়োজন তাদের রাখা হবে বলে তখন ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করলেই গ্যারান্টি ছাড়া লক্ষ টাকার লোন দিচ্ছে কেন্দ্র,হয়ে যাবেন মালামাল
তাহলে সেটা কি শুধুই মুখের কথা? এই প্রশ্ন তোলেন হকাররা
নিজের দলের সাংসদ, বিধায়ক,চেয়ারম্যান, মেয়র সহ সকলকেই ঘুষ নিয়ে এই কাজ করার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু তার ঘোষণা যে শুধু ঘোষণাই রয়ে গিয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে, তারপর থেকেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা একের পর এক বুলডোজার চালিয়ে হকারদের দোকানপাট গুড়িয়ে দিচ্ছেন। আর ঠিক সেভাবেই বুধবার রাতে নিউটাউনের চকপাচুরিয়া সর্দারপাড়া এলাকায় দোকান ভাঙতে যান NKDA আধিকারিকরা। সঙ্গে ছিল টেকনোসিটি থানার পুলিশ প্রশাসন।
গুলি করে প্রাণে মারার হুমকি পেলেন তৃণমূল সাংসদ, প্রাণভয়ে ভীত বিধায়ক মদনও
যখনই সেখানে তারা বুলডোজার নিয়ে হকার উচ্ছেদ অভিযানে নামতে যান, তখন সমস্ত হকার একযোগে রুখে দাঁড়ায়। তাদের বক্তব্য, কিছুদিন আগেই এনকেডিএর অফিসাররা এসে এখানে সার্ভে করে গিয়েছেন। তারা বলেছেন, যারা এখানে ব্যবসা করেন তাদের এনকেডি এর পক্ষ থেকে দোকান দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বুলডোজার বন্ধ করার কথা ঘোষণা করার পরেও রাজ্য জুড়ে চলছে বুলডোজার। তাহলে সেটা কি শুধুই মুখের কথা? এই প্রশ্ন তোলেন হকাররা। দোকানদারদের পুনর্বাসন না দিয়ে কিভাবে এই গরিব মানুষদের রুটি রুজি বন্ধ করে দিতে পারেন তারা? হকারদের এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় পুলিশ প্রশাসন এবং এনকেডিএর আধিকারিকদের। নিউটাউন এলাকার হকারদের আরো অভিযোগ, বেছে বেছে কিছু এলাকা থেকেই হকারদের উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি অফিস সংলগ্ন এই এলাকায় যারা দোকান দিয়ে থাকেন, তাদের দোকান ভাঙতেই বুলডোজার নিয়ে এসেছিল পুলিশ। কিন্তু হকাররা পুনর্বাসন দেওয়ার আগে সেই দোকান ভাঙতে চাননি। ফলে তারা প্রতিবাদ করেন। এরপরেই হকারদের বলতে শোনা যায়, আমাদের রুটি রুজি নষ্ট করে দিচ্ছে। যদি আমাদের এই দোকানপাট ভেঙ্গে দেওয়া হয়, তাহলে আমরাও গিয়ে টিএমসির পার্টি অফিস থেকে ভেঙে চুরমার করে দেব। ফলে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এই হকার উচ্ছেদ অভিযানকে ঘিরে দিকে দিকে আইন শৃঙ্খলার সমস্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পনার কথা বলেছেন। সমীক্ষা চালিয়ে আসল হকারদের খুঁজে বের করে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলেছেন। তবুও বাস্তবে কিন্তু সেই কথার সঙ্গে কাজের মিল দেখা যাচ্ছে না।