ব্যুরো নিউজ, ১৩ ফেব্রুয়ারি: সরস্বতী পুজোর আগে ছোটদেরকে বরাবর এই কথাটা বলতে শুনেছি, সরস্বতী পুজোর অঞ্জলির আগে কুল খাবে না। না হলে পরীক্ষায় ফেল করবে। আর তাতেই যবুথবু কচিকাচারা। এই এক অসুধেই যেনও জব্দ। কারন জানতে চাইলে ওই সেই একই দাওয়াই। সরস্বতী বিদ্যার দেবী। তাই বিদ্যার দেবীর পুজোর আগে কুল খেলে বিপদের আর শেষ থাকবে না। বাকদেবী রুষ্ট হয়ে দেবেন ফেল করিয়ে। আর কামাল করতে এই ওষুধই অব্যর্থ।
কিন্তু বড় হয়ে জানতে পারি এর অন্য একটা কারন আছে, সরস্বতী পুজোর আগে পর্যন্ত ভালোভাবে কুল পাকে না। তাই কাচা, কশে ভরা কুল খেলে হতে পারে কাশি। তাই অযথা শরীরের কষ্ট এড়াতেই পূজার আগে কুল খাওয়া হয় না। কিন্তু পুরাণে রয়েছে এর অন্য এক ব্যখ্যা।
সরস্বতী পুজোয় কমবে মেট্রো পরিষেবা
পুরাণ অনুযায়ী, সরস্বতী দেবীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব বদরিকাশ্রমে তপস্য করেছিলেন। তপস্যা শুরুর পূর্বে তার তপস্যা স্থলের কাছে একটি কুল রেখে শর্ত দেওয়া হয় যে, এই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা হবে, চারা থেকে হবে বড় গাছ, গাছ বড় হয়ে তাতে হবে ফুল, সেই ফুল থেকে হবে ফল, অর্থাৎ নতুন কুল। যেদিন সেই কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হবে সেই দিন তার তপস্য পূর্ণ হবে। সরস্বতী দেবী হবেন তুষ্ট।
ব্যাসদেবও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করেন। ধীরে ধীরে বেশ কয়েক বছর এই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে হয় চারা, চারা থেকে বড় গাছ, সেই বড় গাছে ফুল থেকে নতুন কুল হয় এবং একদিন তা পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হয়, তখন ব্যাসদেব বুঝতে পারে যে, সরস্বতী দেবী তার প্রতি তুষ্ট হয়েছেন। সেই দিনটি ছিল শ্রীপঞ্চমীর দিন। সেদিন বেদমাতা সরস্বতীকে বদ্রী বা কুল ফল নিবেদন করে অর্চণা করে তিনি ব্রহ্মসূত্র রচনা আরম্ভ করেন। ( কুল বা বরই এর আর এক নাম বদ্রী, তপস্যার সাথে বদ্রীর সম্পর্ক থাকায় ওই জায়গার নাম বদরিকাশ্রম নামে প্রচার হয়ে যায়)
শ্রীপঞ্চমীর দিন সরস্বতী দেবী তুষ্ট হয়েছিলেন। তাই সেই দিনের আগে আমরা কুল ভক্ষণ করি না। শ্রীপঞ্চমীর দিন সরস্বতী দেবীকে কুল নিবেদন করার পরেই কুল ভক্ষণ করি। স্বাস্থ্যগত কারণেও সরস্বতী পূজার আগে কুল খাওয়া ঠিক না। কারণ মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের আগে কুল কাচা বা কশযুক্ত থাকে। কাচা বা কশযুক্ত কুল খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। ইভিএম নিউজ