HM-Shah on 130 constitutional ammendment act

ব্যুরো নিউজ ২৫শে আগস্ট ২০২৫ : কেন্দ্রের ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল ২০২৫ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই বিল অনুযায়ী, কোনও গুরুতর অপরাধে ৩০ দিন জেলে থাকলে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীদের পদ হারাতে হবে। সম্প্রতি একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে এই বিলের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

আইন সবার জন্য সমান: অমিত শাহ

তিনি বলেন, কোনও তুচ্ছ অভিযোগে কাউকে পদত্যাগ করতে হবে না। যে অপরাধের জন্য পাঁচ বছরের বেশি কারাবাসের বিধান রয়েছে, সেই অভিযোগেই এই বিল কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অফ পিপল অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দুই বা তার বেশি বছরের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই সাজা স্থগিত করে দেওয়ার পর সদস্যপদ আবার ফিরে পাওয়া যায়।

Amit Shah : প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণের প্রস্তাব: ৩ বিল নিয়ে উত্তাল সংসদ, বিরোধী সাংসদদের তীব্র প্রতিবাদ।

কেজরিওয়ালকে নিশানা অমিত শাহের

এই বিলের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে অমিত শাহ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, আবগারি নীতি সংক্রান্ত মামলায় কেজরিওয়াল গ্রেফতার হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি। এই বিল পাশ হয়ে গেলে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হতেন। শাহ আরও বলেন, “জনগণ বিক্ষোভ শুরু করার পর তিনি নৈতিকতার কারণে পদত্যাগ করে আতিশিকে মুখ্যমন্ত্রী করেন, কারণ তিনি যখন বাইরে ঘোরাফেরা শুরু করলেন, তখন জনগণ তাঁকে প্রশ্ন করতে শুরু করে।” তিনি বলেন, সংবিধান প্রণয়নের সময় কেউ কল্পনাও করেননি যে একজন মুখ্যমন্ত্রী জেলে বসে সরকার চালাবেন।

যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) নিয়ে বিরোধী বিরোধিতার জবাব

বিরোধীরা এই বিলের জন্য গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) বয়কট করা প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, বিরোধীরা অংশগ্রহণ না করলেও কমিটি তার কাজ করবে। তিনি বলেন, বিরোধীদের তাঁদের মতামত জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁরা সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন কিনা, সেটা তাদের বিষয়। উল্লেখ্য , প্রসাশনিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস এই সংশোধন বিশ্লেষণের জন্য গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি কে বয়কট করেছে । 

নৈতিকতার কথা বললেন শাহ, ইন্দিরা গান্ধীর উদাহরণ তুলে ধরলেন

অমিত শাহ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, এই বিল পাশ হবেই। তিনি আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত যে কংগ্রেস এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে অনেকেই নৈতিকতার পক্ষে থাকবে।” তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই বিলের আওতায় এসেছেন। এর আগে ইন্দিরা গান্ধী ৩৯তম সংশোধনী এনে প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রপতি এবং স্পিকারকে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার বাইরে রেখেছিলেন। কিন্তু মোদী এই বিল এনে নিজেকে আইনের সামনে এনেছেন। তিনি বলেন, এই বিলের লক্ষ্য “সাংবিধানিক নৈতিকতা” ও জনগণের বিশ্বাস রক্ষা করা।

আদালত হস্তক্ষেপ করবে না: শাহ

বিরোধীদের এই অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন অমিত শাহ যে এই বিলের মাধ্যমে সরকার আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে জামিনে বিলম্ব ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, আদালত আইনের গুরুত্ব বোঝে। যখন কাউকে ৩০ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে, তখন তার আগেই আদালত জামিন দেবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, যখন কেজরিওয়ালের বিষয়টি হাইকোর্টে গিয়েছিল, তখন যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। হাইকোর্ট তখন জানায়, নৈতিকতার কারণে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত, কিন্তু বর্তমান আইনে সেই বিধান নেই।

Abhishek Banerjee : প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর অপসারণ বিল: রাহুল ও অভিষেকের ক্ষোভ, দুই কংগ্রেসের চরম প্রতিবাদ

জামিন পেলে পদে ফিরতে পারবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অমিত শাহ এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, বিলটি সবার জন্য সমান। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তিনি বলেন, কেউ ৩০ দিনের পরেও জামিন পেলে শপথ নিয়ে আবার পদে ফিরতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, “আমাদের মূল কথা হল কেউ জেল থেকে সরকার চালাতে পারবে না। যদি তারা ৪০ দিনের মধ্যে জামিন পায়, তাহলে তারা আবার শপথ নিতে পারে। এটি তাদের আস্থা দেবে যে একবার জামিন পেলে তারা তাদের পদে ফিরতে পারবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর