লাবনী চৌধুরী, ২৮ ফেব্রুয়ারি: ‘ক্যান্সার’ কথাটা শুনলেই মাথায় হাত পড়ে যায়। মনে হয় এই বুঝি যমরাজ দাড়িয়ে আছে দরজায়। কখন ডাক আসবে কেউ জানেনা। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসার দুরুন দীর্ঘ সময় ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন অনেকেই। এমন উদাহরণ এদেশে- বিদেশে বহু রয়েছে। কিন্তু তবুও তার পরেও ‘ক্যান্সার’ একটা নাম শুনলে যেন শরীরে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এবার ‘ক্যান্সার-মুক্তি’ সম্ভব। তার জন্য ব্যায় করতে হবে না লক্ষ লক্ষ টাকা।
পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিজ্ঞাপন ‘বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা’ | কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ত্সনা
সাধারন পরিবারে ক্যান্সার চিকিৎসা করানোর কথা ভাবা প্রায় অসম্ভব। কারন যাদের দিন আনতে পান্তা ফুঁড়ায় সেই সব পরিবারে ব্যয় বহুল এই চিকিৎসা করানো প্রায় অসম্ভব। আধুনিক চিকিৎসায় ক্যান্সার নিরাময় হলেও তার মধ্যে রয়েছে বহু জটিলতা। পাশাপাশি রয়েছে ‘সাইড এফেক্ট’ বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। সুস্থ হওয়ার পরও ফের দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হতে পারেন রোগী। আর এই মারণ ব্যাধিকে জব্দ করতে চিকিৎসা চালাচ্ছে বহু বড় বড় ইন্সটিটিউট। কিন্তু এবার ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুখবর দিল ভারতের টাটা ইন্সটিটিউট। এই ইন্সটিটিউট ১০ বছর ধরে গবেষণার মাধ্যমে যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার করেছে।
চিকিৎসকেরা বলেন, ক্যান্সার নতুন করে বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। সুস্থ হওয়ার পরও দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হতে পারেন রোগী। সুস্থ কোষে দাঁত-নখ বের করতে থাকে কর্কট-কোষ। সেই সম্ভাবনা যাতে আর না থাকে, নির্ভয়ে যাতে বাকি জীবনটা কাটানো যায়, সেই ওষুধই আবিষ্কার করেছে টাটা মেডিক্যাল।
ক্যান্সার থেকে কি আদৌ মুক্তি পাওয়া যায়?
টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ড. রাজেন্দ্র বাদভে জানিয়েছেন, টানা ১০ বছরটা ধরে গবেষণা করে সফল হয়েছেন তাঁরা। আর এই ‘ক্যান্সার-মুক্তি’-র ওষুধের দামও খুব বেশি নয়।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, গবেষণায় মানুষের ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ ইঁদুরের শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রথমে টিউমার তৈরি হয়। কিন্তু চিকিৎসা করে সেই টিউমার বাদ দেওয়ার পর ক্যান্সারের কোষগুলো মরে যায়। তারপর সেগুলো ছোট ছোট পার্টিকলে ভেঙে রক্তের সঙ্গে মিশে সুস্থ কোষে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দেখা যায় সুস্থ কোষগুলিও ধিরে ধিরে আক্রান্ত হতে থাকে।
এক্ষেত্রে ইঁদুরের শরীরে প্রো-অক্সিড্যান্ট ট্যাবলেট দিয়ে দেখা গিয়েছে তা কাজ করছে। এর সঙ্গেই রেজভেরাট্রোল ও কপার (R+Cu) দিয়ে দেখা গিয়েছে, পার্টিকলগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে সেগুলো আর রক্তের সঙ্গে মিশে এক অঙ্গ থেকে আর এক অঙ্গে যেতে পারছে না। আর এই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কম। এই ওষুধ কাজ করে ফুসফুস, পাকস্থলী ও মুখের ক্যান্সারে।
চিকিৎসক এও জানিয়েছেন, ক্যান্সার চিকিৎসা অনেক বেশি ব্যয় বহুল সেক্ষেত্রে সাধারন পরিবারের সেই সামর্থ থাকে না। কিন্তু এই গবেষণায় দেখা গেছে যদি, প্রো-অক্সিড্যান্ট ট্যাবলেটের সঙ্গে রেজভেরাট্রোল ও কপার দেওয়া যায় তবে তা দ্বিতীয়বার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমায় পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে খরচও অনেক সীমিত। এই ওষুধকে বলা হচ্ছে- Magic of R+Cu।. এই ওষুধের দাম হবে ১০০ টাকা।
তবে এফএসএসআই (Food Safety and Standards Authority of India)-র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এই ওষুধ। অনুমোদন পেলেই স্বল্প খরচে ব্যবহার করা যাবে এই ওষুধ।