ব্যুরো নিউজ, ৪ ডিসেম্বর: উপর থেকে পড়ে মৃত প্রৌঢ়
রবিবার সকাল ছ’টা নাগাদ একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার মুকুন্দপুর সংলগ্ন একটি আবাসনে। শুনশান ওই আবাসনের উপর থেকে কিছু একটা নীচে পরার শব্দ পেয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই শব্দ পেয়ে তাঁরা তড়িঘড়ি ছুটে এসে দেখেন আবাসনের নীচে পরে রয়েছে এক ব্যাক্তি। তাঁর নাক, মাথা, মুখ সব থেঁতলে গিয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আশপাশ। এরপর সময় নষ্ট না করে দ্রুত নিরাপত্তারক্ষীরা আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের খবর দেয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই ব্যাক্তির নাম রঞ্জন বসু। তাঁর বয়স ৬৬ বছর। তিনি ওই আবাসনেই থাকতেন। তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন রঞ্জন। মল্লিকবাজারের একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ইদানীং কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না প্রৌঢ়। নিজেকে কার্যত ঘরবন্দি করে রাখতেন।
পুজো দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু বৃদ্ধের
পুলিশ সূত্রের খবর, আবাসনের ১ ই ব্লকের ১৪ তলায় নিজের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন রঞ্জন। বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী। ওই দম্পতির এক মেয়ে আছেন। তিনি কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। ২০১৮ সাল থেকে ওই বহুতলে সপরিবার থাকতেন রঞ্জন। গত ২০ নভেম্বর দিল্লিতে মেয়ের কাছে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। ফলে, বাড়িতে একাই ছিলেন মৃত ওই প্রৌঢ়। এ দিন সকালে আবাসনের নীচের থেকে উদ্ধার হয় তাঁর রক্তাক্ত দেহ।
ওই বহুতলের অন্য আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন, আবাসনের ছাদ সব সময়ে বন্ধ থাকত। তাই ছাদ থেকে যে ওই প্রৌঢ় ঝাঁপ দেননি, তা নিয়ে এক প্রকার নিশ্চিত তাঁরা। তবে, আবাসনের ১৭ তলায় সামনের অংশের একটি জানলার একাংশ খোলা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। সেখানে এক জোড়া জুতোও মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, সেখান থেকেই ওই প্রৌঢ় ঝাঁপ দিয়ে থাকতে পারেন। তবে, নিশ্চিত হতে আবাসনের নীচের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই প্রৌঢ়ের সমস্ত ঘর খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে ওষুধ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত বহুতলের অন্য আবাসিকেরা। ওই প্রৌঢ়ের পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল কি না, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি প্রতিবেশীরা। রঞ্জন প্রতিবশীদের সঙ্গে কম কথা বললেও তাঁর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেননি বলে দাবি করছেন তাঁরা। ইভিএম নিউজ