Vice-President-Election India

ব্যুরো নিউজ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : ভারতের ১৪তম উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের আকস্মিক পদত্যাগের পর আজ দেশের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত। সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যরা তাঁদের ভোট দিতে প্রস্তুত। এই নির্বাচনকে মতাদর্শের লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে শাসক জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) প্রবীণ আরএসএস নেতা সি পি রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করেছে এবং বিরোধী জোট প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি বলকৃষ্ণ সুদর্শন রেড্ডিকে মনোনীত করেছে।

ভোটের অঙ্ক এবং প্রক্রিয়া

সংসদ ভবনের রুম F-101, বসুধায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এই নির্বাচনে মোট ৭৮১ জন সাংসদ ভোট দেবেন, যার মধ্যে লোকসভার ৫৪২ জন এবং রাজ্যসভার ২৩৯ জন সদস্য রয়েছেন। ইলেক্টোরাল কলেজে এনডিএ-র হাতে ৪২৫ জন সদস্যের সমর্থন রয়েছে, যার মধ্যে বিজেপি-র একাই রয়েছে ৩৪২ জন। অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের দখলে রয়েছে ৩২৪ জন সাংসদ, যার মধ্যে কংগ্রেসের ১২৬ জন। বিজু জনতা দল (বিজেডি), ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) এবং শিরোমণি অকালি দল (এসএডি)-এর মতো কিছু আঞ্চলিক দল এই ভোট থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে।

ভারতীয় সংবিধানের ৬৬ ধারা অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতি সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন।

প্রার্থীদের পরিচিতি

সি পি রাধাকৃষ্ণণ
এনডিএ-র প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণণ বর্তমানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং দুবারের লোকসভা সাংসদ রাধাকৃষ্ণণকে তামিলনাড়ুতে বিজেপির ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৭ সালের ২০ অক্টোবর তামিলনাড়ুর তিরুপুরে জন্মগ্রহণকারী রাধাকৃষ্ণণ একজন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে তিনি কোয়েম্বাটোর থেকে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাধাকৃষ্ণণকে একজন “উৎকৃষ্ট উপরাষ্ট্রপতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন। ভোটগ্রহণের আগে তিনি দিল্লির শ্রী রাম মন্দিরে পূজা দিয়েছেন।

বলকৃষ্ণ সুদর্শন রেড্ডি
বিরোধী জোটের প্রার্থী প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি বলকৃষ্ণ সুদর্শন রেড্ডি। তিনি প্রথম প্রাক্তন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি যিনি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি গোয়ার প্রথম লোকায়ুক্ত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে অবিভক্ত অন্ধ্র প্রদেশের রাঙ্গা রেড্ডি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ১৯৭১ সালে ওসামানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক হন। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্টে সরকারি আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৯০ সালে ভারত সরকারের অতিরিক্ত স্থায়ী কাউন্সেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি এবং ২০০৫ সালে গৌহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন।

জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগ

২০২৫ সালের ২১ জুলাই স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এটি ছিল সংসদীয় বর্ষা অধিবেশনের প্রথম দিনেই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তাঁর পদত্যাগকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়। বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অভিশংসন প্রস্তাব গ্রহণ করার বিষয়টি তাঁর পদত্যাগের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর