ব্যুরো নিউজ,১ অক্টোবর:সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের প্রতিবেশী মায়ানমারে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে টাইফুন ইয়াগি। এর প্রভাব কেবল মায়ানমারেই সীমাবদ্ধ থাকে নি বরং ভিয়েতনাম, লাওস, হাইনান এবং ফিলিপিন্সেও পড়ে। এই দুর্যোগে তাইল্যান্ডও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে, একটি কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে ওঠে।টাইফুনের জেরে এই কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্রে জলস্তর ক্রমশ বাড়তে থাকে, এবং দেওয়াল ক্ষয়ে যেতে থাকে। ফলে ১০০টিরও বেশি সিয়াম কুমির বেরিয়ে গিয়ে লকালয়ে ঢোকার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে, কুমির চাষি ন্যাথাপাক খুমকাদের সিদ্ধান্ত ছিল খুব কঠিন। তিনি জানিয়েছেন, কুমিরগুলিকে মেরে ফেলা তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।
পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের উত্তাপঃ লেবাননে হিজবোল্লা নেতার মৃত্যু
‘ক্রোকোডাইল এক্স’
ন্যাথাপাক, যিনি ‘ক্রোকোডাইল এক্স’ নামেও পরিচিত, বলেন, “যদি কুমিরগুলি লোকালয়ে চলে যেত, তাহলে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।” তার সংরক্ষণ কেন্দ্রে থাকা কুমিরগুলির দৈর্ঘ্য ১৩ ফুট পর্যন্ত ছিল এবং সেগুলি অত্যন্ত হিংস্র। তাই পরিস্থিতির চাপে পড়ে, তিনি ২২ সেপ্টেম্বর ১২৫টি কুমিরকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।এ বিষয়ে ন্যাথাপাক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানান, “আমাকে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে কুমিরগুলিকে হত্যা করেন। তার এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ল্যামফুনের মৎস্য বিভাগের প্রধান পর্ণথিপ নুয়ালানং, যিনি বলেন, “এটি সাহসী এবং দায়িত্বশীল পদক্ষেপ।” মৃত কুমিরগুলির মধ্যে একটি ছিল আই হার্ন, যেটি ছিল ন্যাথাপাকের সংরক্ষণ কেন্দ্রের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ কুমির। আই হার্নের প্রজনন ক্ষমতা এবং বিশাল আকারের জন্য বেশ সুনাম ছিল। ন্যাথাপাকের কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্রটি উত্তর তাইল্যান্ডে অবস্থিত এবং তিনি ১৭ বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।
রজনীকান্ত হাসপাতালে ভর্তিঃ ভক্তদের মধ্যে উদ্বেগ
সিয়াম প্রজাতির কুমির বর্তমানে গুরুতর বিপন্ন। তাইল্যান্ডে কুমিরের প্রজনন করা হলেও চোরাশিকারির কারণে তাদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে সেখানে মাত্র কয়েক’শো সিয়াম কুমিরই বেঁচে রয়েছেে সুতরাং, এই কঠিন পরিস্থিতিতে ন্যাথাপাকের এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি পরিস্থিতির গুরুত্বকে তুলে ধরছে। তাইল্যান্ডে কুমির চাষ একটি লাভজনক শিল্প, যেখানে বছরে আনুমানিক ১৮ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। টাইফুন ইয়াগির পরিণতি কেবল কুমিরের জন্য নয়, বরং পরিবেশের ভারসাম্যের জন্যও একটি বড় সংকেত।