ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের শেয়ারবাজারে বড় ধাক্কা খেয়েছে, কারণ ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা পর্যটনের চাহিদাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় ভ্রমণ বাতিল, বিদেশি পর্যটনের হ্রাস এবং ঐচ্ছিক খরচ কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাতারাতি পাকিস্তানের ভারী আর্টিলারি গোলাবর্ষণ, ড্রোন এবং লোইটারিং মিউনিশন হামলার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে লক্ষ্যবস্তু হয় জম্মু বিমানবন্দর (যেখানে একটি ভারতীয় বিমানবাহিনী স্টেশনও রয়েছে) এবং পাঠানকোট এয়ারবেস।
শুক্রবার সকাল ১১:৩০টায় শেয়ারবাজারে বড় ক্ষতির মুখে পড়ে ইয়াত্রা অনলাইন, ইজমাইট্রিপ এবং থমাস কুক (ইন্ডিয়া)-র মতো ভ্রমণভিত্তিক সংস্থাগুলি, যাদের শেয়ার ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়। ইন্টারগ্লোব এভিয়েশনের শেয়ারও ২ শতাংশ কমে যায়।
হোটেল সংস্থার শেয়ারগুলিও পতনের সম্মুখীন হয়—ইন্ডিয়ান হোটেলস কোম্পানি, আইটিসি হোটেলস, ইআইএইচ এবং চালেট হোটেলস-এর শেয়ার ৭ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় আকাশসীমা ব্যবহারে বিধিনিষেধ এবং একের পর এক ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিমান সংস্থাগুলো বড় ধাক্কা খেতে চলেছে। এর ফলে যাত্রাপথ ও ভ্রমণ পরিকল্পনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, এবং ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বিমান সংস্থাই সেবা বাতিল বা অন্য পথে চালিত করছে।
সরকার উত্তর ভারতের ২৪টি বিমানবন্দরকে বেসামরিক ফ্লাইটের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ দেশে ব্ল্যাকআউট (বিদ্যুৎ নিস্ক্রিয়করণ) চালু করা হয়েছে। চণ্ডীগড়, শ্রীনগর, জয়সালমির, শিমলা প্রভৃতি শহরে বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
আগের সেশনে ইন্ডিগোর অপারেটর ইন্টারগ্লোব এভিয়েশনের শেয়ার ৪ শতাংশ পড়ে যায়, এবং স্পাইসজেটের শেয়ার ৩.৭ শতাংশ কমে যায়, যা ক্ষতির ধারা আরও বাড়ায়। ৭ মে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযান চালানোর পর, এই দুই বিমান সংস্থা ফ্লাইট বাতিল করে ও রুট পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়।
আন্তর্জাতিক ব্রোকারেজ সংস্থা জেফারিজ উল্লেখ করেছে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বেড়ে যাওয়ার ফলে পর্যটন, শিল্প এবং উচ্চ-বেটা শেয়ারের ওপর প্রভাব পড়বে। ফলে তারা তাদের পোর্টফোলিও থেকে পর্যটন ও শিল্প খাতের শেয়ারের ওজন হ্রাস করেছে।