ব্যুরো নিউজ ৪ সেপ্টেম্বর: আজ দ্বিতীয়া। মা দুর্গার বোধনের বাকি চার দিন। তবে কলকাতার ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়িতে পুজো শুরু হয়ে গেছে মহালয়া থেকেই। দশদিন ব্যাপী এই পুজো উপলক্ষে বাড়ির ঠাকুরদালান সেজে উঠেছে উজ্জ্বলতায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবারের সদস্যরা একে একে আসতে শুরু করেছেন। ১৭০ বছর ধরে এইভাবেই পুজো করে আসছে দত্ত পরিবার।
থাইল্যান্ডে সমকামী বিয়ের অনুমোদনঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ!
জেনে নিন কেমন হয় বনেদি বাড়ির পূজো
দত্ত পরিবারের পুজো অন্যান্য বনেদি বাড়ির পুজোর থেকে একেবারেই আলাদা। ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা সুবর্ণ বণিক দ্বারিকানাথ দত্ত ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী, যিনি মণিমানিক্যের ব্যবসায় বিপুল লাভের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। প্রথমে হুগলির আদি সপ্তগ্রামের বাসিন্দা হলেও, হুগলির বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ১৮৫০ সালে ঠনঠনিয়া এলাকায় নতুন বাড়ি নির্মাণ করেন। এরপর ১৮৫৫ সালে শুরু হয় এই পুজো।এই পরিবারের পুজোর একটি বিশেষত্ব হল, মা দুর্গা পূজিত হন কন্যা রূপে। দেবাবিদেব মহাদেবের কোলে আসীন হয়ে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন। পুজোটি বৈষ্ণব নিয়ম মেনে করা হয়, তবে অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে বিশেষ সন্ধিপুজো করা হয় চামুণ্ডারূপে। এখানে ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ির পুজোতে চামুণ্ডার পুজোও গুরুত্বপূর্ণ। দেবী চামুণ্ডার পুজোতে রক্ত ও মাংসের ব্যবহার অত্যাবশ্যক, কিন্তু এখানে মাসকলাইয়ের ডাল ভোগ হিসাবে দেওয়া হয়। কারণ, হিন্দি শব্দ “মাস”-এর অর্থও মাংস। এই প্রথা অনুসারে রক্ত চন্দনও আনা হয়, এবং পুজো শুরু হয়।নবমীর দিন বিশেষভাবে কুমারী পুজোর সঙ্গে সধবা পুজোও করা হয়। পুজোর চারদিনে ১৪ মন আতপ চাল ও আড়াই মন চিনি দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ মিষ্টি, যা মা দুর্গার কাছে নিবেদন করা হয়। ধুনো পোড়ানোর একটি রীতি রয়েছে, যা পূজার পরিবেশকে আরও পবিত্র করে তোলে।
উত্তরাখণ্ডে সাইবার হামলাঃ সরকারি পরিষেবা অচল!
পুজোর সময় বাড়ির ছেলে-মেয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন, যা পরিবারে আনন্দের আবহ তৈরি করে। দশমীর দিন, আঁশমুখের পর দেবীকে বরণ করে আগামী বছরের জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কলকাতার দুর্গাপুজোর মধ্যে ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ির দুর্গাপুজো বিদেশি দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম সেরা ডেস্টিনেশন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এখানকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন এবং পুজোর আড়ম্বর সকলকে মুগ্ধ করে।