ব্যুরো নিউজ,১৪মার্চ: ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে ভাটার সময় ভেসে ওঠে এক রহস্যময় ভগ্নস্তুপ, যা অনেকের জন্য একটি অপরিচিত দৃশ্য। দিঘা, পশ্চিমবঙ্গের এক প্রিয় সমুদ্র সৈকত, যেখানে পর্যটকরা বছরের পর বছর আসেন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সমুদ্রের রূপ, বালুকাবেলা, এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এক মনোরম অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। কিন্তু দিঘার কিছু রহস্যময় দিকও আছে, যা অনেকেই জানেন না। যেমন, ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে ভাটার সময় ভেসে ওঠে এক রহস্যময় ভগ্নস্তুপ, যা অনেকের জন্য একটি অপরিচিত দৃশ্য। এটি কী, এবং এর ইতিহাস কী ছিল, তা জানলে অনেকেই অবাক হবেন।
পেছনে রয়েছে বহু বছরের ইতিহাস
এক্সট্রা স্পেশাল ফ্রুট কেক যা খেতে খুবই সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর, এই কেক তৈরির জন্য রইল সহজ রেসিপি
দিঘা, এক সময় ছিল বীরকুল নামে পরিচিত একটি ছোট গ্রাম। ব্রিটিশ শাসনামলে, অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে, দিঘা সম্পর্কে সবার প্রথম জানা যায়। ভাইসরয় ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮০ সালের দিকে এক চিঠিতে দিঘাকে ‘প্রাচ্যের ব্রাইটন’ নামে উল্লেখ করেছিলেন। এর পরবর্তী সময়ে, ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ পর্যটক জন ফ্রাঙ্ক স্মিথ দিঘার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ হন যে, তিনি এখানেই বসবাস শুরু করেন। তাঁর লেখালেখির মাধ্যমে দিঘার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়।
ডিন্ডিম,একটি পেঙ্গুইন প্রতি বছর ৫০০০ মাইল সাঁতার কেটে দেখা করতে আসে জোয়াওর সঙ্গে কিভাবে শুনুন
আজকের দিঘা যে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, তার পেছনে বহু বছরের ইতিহাস রয়েছে। ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে দেখা যে রহস্যময় ভগ্নস্তুপটি, তা আসলে এক প্রাচীন ওয়াচ টাওয়ার। ব্রিটিশ শাসনামলে, উপকূলীয় এলাকায় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং সমুদ্রের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সময়ে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সামুদ্রিক বিপর্যয়ও ঘটতে পারত। তবে সময়ের সাথে সাথে, এই টাওয়ারটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তার কিছু অবশিষ্টাংশ এখনও দেখা যায়।
অদ্ভুতভাবে, এই ভগ্নস্তুপটি শুধুমাত্র ভাটার সময় দৃশ্যমান হয়। জোয়ারের সময় এটি সমুদ্রের নিচে চলে যায়। এটি অতীতের এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এখনও তার অস্তিত্বের প্রমাণ রেখে গেছে।আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ এবং শিক্ষক সুদর্শন সেনের মতে, “দিঘার প্রাচীন রূপ আজকের রূপ থেকে অনেকটাই আলাদা। বহু স্থাপনা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে যে ওয়াচ টাওয়ারটি দেখা যায়, তা এক প্রাচীন যুগের চিহ্ন, যা আজও নিজের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে।”
দিঘার এই রহস্যময় ভগ্নস্তুপটি শুধুমাত্র একটি ধ্বংসাবশেষ নয়, বরং এক জীবন্ত ইতিহাস। এই ভগ্নস্তূপের দিকে একদৃষ্টিতে তাকালে, মনে হয় যেন সমুদ্রের অতীত ও বর্তমান এক হয়ে গেছে। তাই, যখনই আপনি দিঘার পুরনো সৈকতে যাবেন, সমুদ্রের দিকে একবার চোখ রাখবেন। ভাটার সময় হয়তো আপনি দেখতে পাবেন এই রহস্যময় টাওয়ার, যা সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।