ব্যুরো নিউজ, ২৩ ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালি একটা দ্বীপ এলাকা। আগে সন্দেশখালি শুনলেই মনে হতো বাঘের রাজ্য সুন্দরবনের একটা অংশ। কতই না সুন্দর সেখানকার প্রকৃতি। সুন্দরী, গরান, গেওর মাঝেই রয়েছে বাঘের ভয়। আর নদীতে ভয় কুমীরের। তবে মনে ভয় থাকলেও বাঘ দেখতে বাঙ্গালী সুন্দরবনে যাবেনা তা কি হয়?
শাহজাহানকে তলবের পরেই জায়গায় জায়গায় তল্লাশি ED-র
তবে এখন যে বাঘের কথা বলব সে বাঘ চতুষ্পদী নয়, দু’পায়েই দিব্যি হেটে চলে বেড়ায় সে। সেই বাঘ মোটর বাইক নিয়ে খেলও দেখায়, বন্দুক হাতে নিয়ে হুমকি দেয়। মজুরি না দিয়ে দিন-মজুরদের জনসমক্ষে লাঠি পেটা করে। সেই বাঘের আতঙ্কেও কাঁপে গোটা এলাকা। তবে এটা দু’পেয়ে বাঘ। সঙ্গে আছে শাবকরাও। রাত হলেই গা ছমছম। এই বুঝি হালুম করে ডাক ছাড়ে সেই বাঘ। আর ডাক ছাড়লেই রক্ষে নেই। রাত-বিরেতে সুন্দরী নধর মেয়ে- বউদের যেতে হবে তার ডেরায়। সারা রাত চলবে তাদের নিয়ে যৌন নিপীড়ন। প্রতিবাদ করলেই দিনের বেলায় তাদের স্বামীদের কপালে জুটতো বেধড়ক মার। মারের চোটে বহু পুরুষই গ্রাম ছাড়া।
ঈশপের মনুষ্যেতর প্রাণীদের নিয়ে সেই গল্প আজ সন্দেশখালির মনুষ্যকূলেও সত্য। বনের রাজার ক্ষুধা নিবারণে একেকদিন যেতে হত একেক প্রাণীকে। সেই প্রাণীটিকে দিয়েই হত তার সেদিনের রসনা তৃপ্তি। আর এখানেও সন্দেশখালির ‘বাঘেদের যৌন ক্ষুধা’ মেটাতে একেক রাতে যেতে হত একেক মহিলাকে। তবে মেধা দিয়ে সিংহকে মারার সুচতুর কৌশল করেছিল খরগোশ। কিন্তু সন্দেশখালিতে অত্যাচারিত মহিলা-পুরুষেরা সরাসরি ঐক্য বদ্ধভাবে দেখাচ্ছেন গনরোষ। সেই সিংহ বোকার মতো কুয়োয় লাফ দিয়েছিল। কিন্তু সন্দেশখালির ‘বাঘ’ সম্ভবত বিপুল অর্থ নিয়ে ইডি হানার পরেই ভাগলবা। সেই যে গেছে আর দেখা মেলেনি শাহাজাহানের। বেচারা দুই সিকি-আধুলি সাগরেদ জেল খেটে মরছে। কে জানে ধর্ষণ মামালায় হয়তো বীরভূমের কেষ্টর মত হাল হতে পারে। তবে কেষ্টর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নেই। তাতেই স-কন্যা তিহার জেলে দিন গুনছেন। নাজানি কতো না গাল মন্দ করছে তার এই দুর্দশার জন্য। সেই অনুমান করেই এখন নিরুদ্দেশ শাহাজাহান। হয়তো বুঝেছে মুন্ডু গেলে খাব কী? পালিয়ে বেঁচে বর্তে থাকলে যা অর্থ আছে তা দিয়ে বাকি জীবন শান্তিতেই কাটবে। বোধ হয় শাহাজাহান বুঝে গেছে একবার গারদে ঢুকলে দলের কেউ দেখতেও আসবেনা। উল্টে মামলা লড়তে লড়তে তোলাবাজির সব পুঁজিপাটাই জলের মতো ফুরিয়ে যাবে। তাই বোধ হয় নীতি নিয়েছে ‘বাঘারে পালারে নিজের প্রাণটা এবার বাঁচারে’। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে হয়তো নিরুদ্দেশে যাওয়া শাহাজাহানের উদ্দেশ্যে পত্র লিখতে হবে-আয় বাবা ধরা দে। কিন্তু শাহাজাহান শয়নে-স্বপনে দেখছে সেই জনগনের লাঠি। তারাই তেড়ে মেরে দাণ্ডা হয়তো করে দেবে ঠাণ্ডা।