ব্যুরো নিউজ,৮ মে: কাশ্মীরে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার জেরে দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো হয়েছে। যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে যখন নানা মহলে জোর আলোচনা চলছে, তখন কলকাতার চারটি স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা মহড়া চালানো হল। বুধবার সকাল থেকেই এই মহড়া শুরু হয়। পড়ুয়াদের শেখানো হয়, সঙ্কট মুহূর্তে কী ভাবে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় নিতে হবে, আগুন লাগলে বা আকাশপথে হামলা হলে করণীয় কী। পাশাপাশি দেওয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণও।
রিজেন্ট পার্কের দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুরু হয় প্রথম মহড়া। সাইরেন বাজতেই শিক্ষকদের নির্দেশে পড়ুয়ারা বেঞ্চের নীচে মাথা ঢেকে বসে পড়ে। কেউ বারান্দার আচ্ছাদনের নীচে আশ্রয় নেয়। প্রধান শিক্ষিকা সুচন্দ্রা লাহা জানান, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে শিশুদের সতর্ক করা হয়েছে। আতঙ্ক নয়, প্রস্তুতি সবচেয়ে জরুরি।’’
যুদ্ধ নয়, চাই শান্তি
মিন্টো পার্কের লা মার্টিনিয়ের ফর বয়েজ় ও গার্লস স্কুলেও চলে একই মহড়া। ঘণ্টা বাজতেই ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বেঞ্চের নীচে বসে পড়ে। মাঠে নিয়ে গিয়ে দেখানো হয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি। গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপকথা সরকার বলেন, ‘‘যুদ্ধ কাম্য নয়। তবে বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুতি থাকা জরুরি।’’ এ সময় এক পড়ুয়ার কথায় যেন ফুটে ওঠে সবার মনোভাব: ‘‘বেঞ্চের নীচে বাঁচব কি না জানি না, তবে যুদ্ধ বন্ধ করলেই তো সব মিটে যায়!’’
দিঘার জগন্নাথধাম বিতর্কে মমতার গর্জন: ‘‘হিংসের ওষুধ হয় না!’’
ডিপিএস রুবি পার্কে এনসিসি-র পড়ুয়ারা মহড়ায় অংশ নেয়। সাইরেন বাজলে আলো নিভিয়ে, জানলা-দরজা বন্ধ করে, কীভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কুলের প্রিন্সিপাল জয়তী চৌধুরী বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। পরিস্থিতি যাই হোক, তারা প্রস্তুত।’’ তবে মহড়ার মধ্যেই পড়ুয়াদের কণ্ঠে শোনা গেল শান্তির আহ্বান— ‘‘সন্ত্রাসবাদ শেষ হোক ঠিকই, তবে যুদ্ধ চাই না।’’ যুদ্ধের ভয় নয়, বরং শান্তির বার্তা নিয়েই ক্লাসরুমে ফিরলেন তারা।