hindu muslim

ব্যুরো নিউজ,২৬ মার্চ : হাওড়ার সাঁকরাইলের আলমপুরে কোলে পরিবার তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এক অনন্য উদ্যোগ চালিয়ে আসছে। পবিত্র রমজান মাসের সাতাশতম রোজার দিন, যা ‘সাতাশে’ নামে পরিচিত, তারা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আয়োজন করে ইফতারের। শুধু আয়োজন করাই নয়, এই বিশেষ দিনে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পরিবারের সকল সদস্যই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।এই ইফতার আয়োজনের সূচনা হয়েছিল এক যুগান্তকারী বন্ধুত্বের হাত ধরে। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ডোমজুড়ের কড়োলা গ্রামের আবুবকর নামের এক ফেরিওয়ালা আলমপুর এলাকায় জামাকাপড় বিক্রি করতেন। কোলে পরিবারের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। ফেরি শেষে তিনি মাঝেমধ্যে তাঁদের বাড়িতে কাপড়ের গাঁটরি রেখে যেতেন। রমজান মাসে সন্ধ্যার সময় তিনি সেখানে থাকলে, পরিবারের তৎকালীন গৃহকর্ত্রী আঙুরবালা কোলে তাঁকে বাতাসার শরবত ও ছোলাসেদ্ধ দিয়ে ইফতার করাতেন।এরপর আবুবকর মারা যান। কিন্তু বন্ধুত্বের বন্ধন থেকে যায়। পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র ভদ্রেশ্বর কোলের সঙ্গে স্থানীয় শিক্ষক নুর নবী লস্করের ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নুর নবীও রমজানে মাঝে মাঝে কোলে পরিবারের বাড়িতে এসে ইফতার করতেন।

মমতার ফুরফুরা সফর এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল! ভোটের আগে কি করতে চলেছেন?

সংগঠিত রূপ নেয় ১৯৯৪ সালে

IPL 2025: শ্রেয়স আইয়ার PANJAB KINGS নতুন দলের দায়িত্ব, নতুন চ্যালেঞ্জ 

১৯৯৪ সালে পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিবছর ‘সাতাশে’ রোজার দিন এলাকায় থাকা মুসলিমদের সম্মান জানিয়ে ইফতারের আয়োজন করবেন। প্রথম বছর মাত্র সাত জন রোজাদার এতে অংশ নেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইফতারের পরিসর বাড়তে থাকে। গত বছর এই আয়োজনে অংশ নেন ৬২ জন রোজাদার।

প্রস্তুতি ও আয়োজন,ইফতারের এক সপ্তাহ আগে থেকেই কোলে পরিবার দাওয়াত দেওয়ার কাজ শুরু করে। পরিবারের সদস্যরা নিজে গিয়ে রোজাদারদের আমন্ত্রণ জানান। ফল ও মিষ্টি কেনার জন্য পরিবারের মহিলারা ধুলাগড়ি পাইকারি বাজারে যান। তরমুজ, খেজুর, আপেল, শসা, পাকা পেঁপে, ফিরনি, সন্দেশসহ বিভিন্ন খাবারের আয়োজন করা হয়।ইফতারের দিন সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বাড়ির উঠোনে প্যান্ডেল বাঁধা হয়, চেয়ার-টেবিল সাজানো হয়। পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে কাজ করেন। বিকেল পাঁচটা থেকে অতিথিরা আসতে শুরু করেন। আজানের ধ্বনি শোনা মাত্রই শরবত পান করে রোজাদাররা উপবাস ভাঙেন, তারপর চলে খাবার পরিবেশন।

পাঞ্জাব বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু, আপ সরকারকে তীব্র আক্রমণ বিরোধীদের

পরিবারের সদস্য অলোক কোলে বলেন, “ধর্মীয় বিভেদের সময়েও আমরা বিশ্বাস করি, মানুষ সবার আগে। এই ইফতার আয়োজন আমাদের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। আমরা চাই, সম্প্রীতির এই ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকে থাকুক।”স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ জাহাঙ্গির, যিনি বিহারের সিওয়ান জেলার বাসিন্দা, প্রতি বছর এই ইফতারে যোগ দেন। তিনি বলেন, “কোলে পরিবারের ইফতার আমার কাছে ইদের উপহার। এই আন্তরিকতা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়।”ইফতারের শেষে সবাই একে একে বিদায় নেন। কোলে পরিবারের সদস্যরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে অতিথিদের বিদায় জানান। দু’পক্ষই যেন অপেক্ষা করে পরের বছরের এই সম্প্রীতির মিলনোৎসবের জন্য।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর