ব্যুরো নিউজ, ১১ সেপ্টেম্বর:গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজের মৃতা তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে কলকাতা পুলিশ রাতে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ দাবি করেছিল যে সঞ্জয়ের পর্নোগ্রাফিতে প্রচন্ড ঝোঁক ছিল। পরে সিবিআই সঞ্জয়ের মোবাইল ঘেঁটে ভারতে নিষিদ্ধ অনেক পর্ন ভিডিও পায়।। যার মধ্যে মৃতদেহের সঙ্গে সহবাসের ভিডিও ও পাওয়া গিয়েছিল তার মোবাইল থেকে। কিছু ভিডিও ছিল আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গের ভেতরের তোলা সহবাসের ভিডিও।
ব্রেন ক্যানসারের কারন অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার নয় ! কি জানাল WHO?
পর্ন ভিডিওর জাল কি আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা করছে?
সেই ভিডিও গুলি কে তুলত? আর কারা কারা এই কান্ডের সাথে জড়িত ছিল? এইসব নিয়ে তদন্তকারীদের হাতে এসেছে অনেক তথ্য। সিবিআই তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে যে আরজিকর মেডিকেল কলেজের মর্গে অবাধ যাতায়াত ছিল ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। শুধু সঞ্জয় রায় নয় তার সাথে সাথে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অনেকেরই রাত বাড়লে প্রায় প্রতিদিন আনাগোনা ছিল মর্গে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে রাত্রে তো ময়নাতদন্ত হয় না ।তাহলে মর্গ খোলা থাকতো কেন? আরজি করের মৃতা তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে নেমে আরজি কর মেডিকেল কলেজের মর্গের ভেতরে থাকা মৃতদেহের সঙ্গে সঞ্জয়ের সহবাসের ভিডিও রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।প্রশ্ন উঠেছে নোংরা কান্ড একা সঞ্জয়ের পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় তাহলে আর কারা তার সাথে যুক্ত ছিল এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ।অভিযোগ উঠেছে মর্গে মৃতদেহের সঙ্গে সহবাসের ভিডিও তুলে কি পর্ন ব্যবসা করা হতো? সেই ভিডিও গুলো কি মোটা টাকার বিনিময়ে বিদেশে পাচার করা হতো? পর্ন ভিডিওর জাল কি আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা করছিল?
৫১ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির পথে আরজি কর কর্তৃপক্ষ
তার সাথে সাথে আরো বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। সেগুলি হল 2021 সাল থেকে প্রায় প্রতি বছরই অন্তত ৬০ থেকে ৭০ টি করে মৃতদেহের হিসেব পাওয়া যায় নি। মৃতদেহের ময়না তদন্তের পর সেলাই থেকে শুরু করে শ্মশান পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য নূন্যতম ১০ হাজার টাকা জোর করে নেওয়া হতো বলে অভিযোগ। ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান প্রবীর চক্রবর্তী এর কাছে রেজিস্টার খাতার মৃতদেহের হিসেব না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারেননি।
হাসপাতালে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে মর্গ বন্ধ করে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে গভীর রাতে মর্গের ভেতরে আলো জ্বলতে দেখা যেত । কোল্ড চেম্বার গুলোও খোলা হত এবং তারপর সেখান থেকে মৃতদেহ বের করে চলতো সহবাস । সেই সহবাসের ভিডিও মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করা হতো । এই জঘন্য কাজের সাথে কারা কারা যুক্ত এবং সেই চক্রের শিকড় কত দূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে সেটা এখন খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। হাসপাতালের একজন কর্মী বলেছেন সন্ধ্যের পর থেকেই মদের বোতল নিয়ে মরগে ঢুকে যেত অভিযুক্তরা । ছোটখাটো কর্মীদের তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস ছিল না। আর বললেই তাদেরকে হুমকি দেওয়া হতো চাকরি বদলির অথবা চাকরি খেয়ে নেওয়ার। তাই অন্যায় দেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে চুপচাপ সহ্য করাটাই একটা অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছিল।