পুজোর সময় এসে গেলেও প্রতিমা শিল্পী এবং পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে চিন্তায় রয়েছে। গত দেড় মাস ধরে আর জি কর-কাণ্ডের প্রভাব অনুভব করা যাচ্ছিল। এখন তার ওপর নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। অনেক পুজো উদ্যোক্তা, শিল্পী ও কারিগরই কাজের অগ্রগতি নিয়ে চিন্তিত।
বাংলায় নিম্নচাপের বৃষ্টিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গির
বন্ধ সব মণ্ডপের কাজ
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার গৌরীবাড়ি এলাকার একটি পুজো মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, সামনের মাঠটি জল এবং কাদায় ভরা। উদ্যোক্তা মান্টা মিশ্র জানালেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য বাইরের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কাদা প্যাচপেচে মাঠে কীভাবে কাজ হবে? আমাদের এখন বাইরের কাজ শেষ করতে হবে ।মুদিয়ালি এলাকার উদ্যোক্তা মনোজ সাউ বলেন, ‘বাইরে কাজ করতে ত্রিপল টাঙানো হয়েছে, কিন্তু পুরোটা সম্ভব হচ্ছে না। ভিতরে কিছু জায়গা ভিজে গেছে, দ্রুত শুকানোর জন্য বড় পাখার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’বাগুইআটির রেলপুকুরের পুজো মণ্ডপেও কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। উদ্যোক্তা উৎপল চন্দ্র বলেন, ‘বাইরের বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি, আশেপাশের এলাকায় জল জমেছে। আমাদের মণ্ডপের পাশের পুকুরও ফুলে গেছে। পাম্প দিয়ে জল বার করতে হচ্ছে, অনেক শ্রমিক কাজ করতে পারছেন না।’কুমোরটুলিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। শিল্পীদের স্টুডিওগুলো প্লাস্টিকে মুড়ে ফেলা হয়েছে। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতির সভাপতি মন্টু পাল বলেন, ‘প্রতিমার রং শুকোচ্ছে না। বৃষ্টির জন্য অনেক কারিগর আসতে পারছেন না, বিশেষ করে যাঁদের মাটির কাজ চলছে। মাটি না শুকোলে কাজও এগোবে না।’
পুজোর জন্য বিদ্যুতের বিশেষ ব্যবস্থা নিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী
মৃৎশিল্পী অপূর্ব পাল জানান, ‘‘গণেশ পুজোর পরে দুর্গার কিছু প্রতিমার কাজের বায়না নিয়েছিলাম। কিন্তু মাটির কাজ শেষ হচ্ছে না।’ শিল্পী মালা পাল বলেন, ‘আমার কাজ প্রায় শেষ, তবে সবকিছু প্লাস্টিকে ঢাকা রয়েছে। উদ্যোক্তারা বৃষ্টিতে প্রতিমা নিতে আসতে পারছেন না। আমি চিন্তিত, কারণ আমার একটি প্রতিমা কাতারে যাওয়ার কথা। বৃষ্টি না কমলে বিমানবন্দরে কীভাবে নিয়ে যাব?’সকলের মাথায় এখন একটাই প্রশ্ন—পুজোর আগে কি সময়মতো সব কাজ শেষ হবে? এই অবস্থায় পুজো উদ্যোক্তাদের এবং শিল্পীদের জন্য চ্যালেঞ্জ আরও বাড়ছে।