ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: গুজরাতের হৃদয়ে বৃহস্পতিবারের দুপুর যেন রুদ্ধশ্বাস এক দুঃস্বপ্ন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ক’কিলোমিটার দূরে বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল-এর উপর ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়ঙ্কর বিমান এআই১৭১। ২৪২ জন যাত্রীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, শেষ গন্তব্য হয়ে দাঁড়াল মেডিক্যাল হস্টেলের মেসঘর।
তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাকেশ দিওরিয়া-র মৃত্যু
এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন মেডিক্যাল ছাত্র, দু’জন চিকিৎসা প্রশিক্ষক ও তিনজন অভিভাবক।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরে ক্লাস শেষে হস্টেলের মেসে খেতে বসেছিলেন বহু পড়ুয়া। ঠিক তখনই আকাশ থেকে বিকট শব্দে ধেয়ে এল ড্রিমলাইনার। মুহূর্তের মধ্যেই বিস্ফোরণ ও কাঁপুনিতে তছনছ হয়ে যায় গোটা হস্টেল ভবন। বিমানের ধ্বংসাবশেষে গুঁড়িয়ে যায় মেসের দেওয়াল, রান্নাঘর। কাচ-লোহার টুকরো ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ছড়ায় আতঙ্ক ও ধোঁয়া।
হস্টেলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাকেশ দিওরিয়া-র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সহপাঠীরা। ভাবনগরের বাসিন্দা রাকেশের মতো আরও চারজন ছাত্র এবং দুই পোস্ট-ডক্টরাল ট্রেনির মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। তবে বেসরকারি সূত্রে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি—কমপক্ষে ২৫। গুরুতর জখম বহু পড়ুয়াকে আমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, যাঁদের কেউ ফুসফুসের আঘাত, কেউ পা ভেঙে হাসপাতালে।
গরমে হাঁসফাঁস? বৃষ্টি আসছে উদ্ধার করতে!
এক অভিভাবক রোমিলা বেন জানান, “ছেলে দুপুরে খেতে গিয়ে মেসে ছিল। হঠাৎ বিমান ভেঙে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে ও দোতলা থেকে ঝাঁপ দেয়।” ছেলের জীবন বাঁচলেও ভয়াবহ চোট লেগেছে।
এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে এনআইএ এবং এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। ঘটনা ঘিরে প্রশ্ন উঠছে—ড্রিমলাইনার কেন টেক অফের পরপরই কন্ট্রোল হারাল? এই দুর্ঘটনার পেছনে যান্ত্রিক ত্রুটি, নাকি সন্ত্রাস বা অন্তর্ঘাত?
আবাস যোজনার টাকা পেয়েও বাড়ি তৈরি করতে পারছেন না
পূর্বে খালিস্তানি হুমকি, এয়ার ইন্ডিয়ার উপর বারবার হোক্স কল এবং একের পর এক টেকনিক্যাল ফল্ট—সব কিছু মিলে গোটা দুর্ঘটনাকেই ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে নিহত পড়ুয়াদের পরিবার, সহপাঠী ও গোটা মেডিক্যাল কমিউনিটিতে শোকের ছায়া।
এই দুর্ঘটনা কেবল একটি বিমান দুর্ঘটনা নয়, বরং দেশের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের উপর নেমে আসা এক ভয়ানক অন্ধকার। এখন শুধু একটাই অপেক্ষা—ব্ল্যাক বক্সের রিপোর্ট ও সত্য উদঘাটনের।
