ব্যুরো নিউজ,১৫মার্চ: অন্ধ্রপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণ সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে হিন্দি ভাষার বিরোধিতার বিষয়ে এক নতুন বিতর্ক উত্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, দক্ষিণী রাজ্যগুলির নেতারা হিন্দি ভাষা সম্পর্কে আপত্তি তো জানাচ্ছেন, কিন্তু একই সময় তারা তামিল ছবির হিন্দি ডাবিং চেয়ে আর্থিক সুবিধা লাভ করতে চান। তিনি আরও বলেছেন, এ ধরনের দ্বিচারিতা অত্যন্ত অসঙ্গতিপূর্ণ এবং তামিলনাড়ুর নেতাদের নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করা উচিত।
তামিলনাড়ুতে নতুন করে তোলপাড় সৃষ্টি
চৈত্রের শুরুতেই তাপপ্রবাহের খেল শুরু সতর্কতা আবহাওয়া দপ্তরের
অন্ধ্রপ্রদেশের এই রাজনৈতিক নেতা তাঁর ভাষণে বলেন, “তামিলনাড়ুতে কিছু মানুষ হিন্দির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, কিন্তু আমি অবাক হই যখন দেখি, একই সময় তারা তামিল ছবির হিন্দি ডাবিং চাইছেন,যাতে তারা আর্থিক লাভ করতে পারেন। তারা বলিউড থেকে টাকা নিতে চান, কিন্তু হিন্দি ভাষাকে গ্রহণ করতে চান না—এটা কী ধরনের আচরণ?” তিনি আরও যোগ করেন যে, তামিলনাড়ু যদি হিন্দি ভাষার বিরোধিতা করে, তাহলে হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির শ্রমিকদের কাজের অনুমতি তাদের রাজ্যে দেওয়া উচিত নয়, কারণ দক্ষিণী রাজ্যে বহু শ্রমিক উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা, ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসেন। ঐতিহাসিক সমীক্ষা অনুযায়ী, এই পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ।
মেথি বীজ শুধু রান্নাঘরের মসলা নয় আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এক আশীর্বাদ!কিভাবে জানুন
তামিলনাড়ুতে চলমান ‘ভাষাযুদ্ধ’ এর প্রসঙ্গে পবন কল্যাণের এই মন্তব্য নতুন করে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক কালে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে হিন্দির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ উঠেছে। তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন হিন্দি ভাষার উপর আক্রমণ চালিয়ে বলেছেন, “হিন্দি আগ্রাসনের কারণে দেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলি বিপন্ন হয়ে পড়ছে।” তাঁর এই বক্তব্যের পর, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান হিন্দি শিক্ষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং তামিলনাড়ু সরকারের উপর এই বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
দীঘার রহস্যময় ওয়াচ টাওয়ার যা হঠাৎ করে ভেসে ওঠে ,কখন দেখা যায় এটিকে
তবে পবন কল্যাণের এই মন্তব্যের পর পাল্টা আক্রমণ করেছে ডিএমকে। দলটির নেতা টিকেএস এলানগোভান বলেন, “১৯৩৮ সাল থেকে আমরা হিন্দির বিরোধিতা করছি। তামিলনাড়ুতে সর্বদা দ্বিভাষী ব্যবস্থা অনুসরণের জন্য একটি বিল পাশ করা হয়েছিল ১৯৬৮ সালে, যা শিক্ষাবিদদের পরামর্শে করা হয়েছিল, অভিনেতাদের নয়। পবন কল্যাণ এখনো জন্ম নেননি, তাই তিনি তামিলনাড়ুর রাজনীতি বুঝতে পারেন না।”
এই ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, প্রশ্ন উঠেছে যে, ভারতীয় রাজনীতিতে ভাষার এই যুদ্ধ কখন শেষ হবে। দক্ষিণী রাজ্যগুলির ভাষাগত দাবিগুলি একদিকে যেমন জাতীয় ঐক্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, অন্যদিকে, একাধিক ভাষার সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যাচ্ছে।