ব্যুরো নিউজ, ২ অগাস্ট: তিনি যে ইভেন্টে পদক জিতেছেন সেই ইভেন্টে পদক জেতা প্রায় অসম্ভব। চাই অসীম একাগ্রতা । একটু অন্যমনস্ক হলেই ইভেন্ট থেকে বাদ। ইভেন্ট টির নাম হল ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পোজিশনস্।পদকজয়ী স্বপ্নীল। তার সাথে ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনির অনেকটা মিল আছে। মহেন্দ্র সিং ধোনি একসময় ট্রেনের টিটি ছিলেন। স্বপ্নীলও ট্রেনের টিটির কাজ করেছেন। প্রথমজন খড়্গপুরের টিটি ছিলেন আর দ্বিতীয়জন পুনে ডিভিশন স্টেশনের। স্টেশনের টিটি থাকাকালীন মানুষ জন তাদের চিনতোও না। পাশ কাটিয়ে সবাই চলে যেতো টিকিট দেখিয়ে। তখন কে জানতো যে তারাই খবরের শিরোনামে আসবে একসময়। ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। আর ২০২৪-এর প্যারিস অলিম্পিকসে স্বপ্নীল ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনস এ ব্রোঞ্জ জয়ী নায়ক। এর আগে কোনো ভারতীয় এই ইভেন্টে পদক পাননি। স্বপ্নীল তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ জিতে ভারতকে গর্বিত করলেন বিশ্বের কাছে।
সপ্নিলের সপ্ন সফল
২৫০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরল মহারাজ
দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে রুপো জিতলেন ইউক্রেনের সেরহেই কুলিশ এবং প্রথম স্থান অধিকার করে সোনা জিতলেন চিনের লিউ ইউ কুন। ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনস্ যাকে শুটিং এর ট্রায়াথলন বলা হয় কারণ এই ইভেন্টে তিনটি অবস্থানে শুটিং করতে হয়। প্রোন, নিলিং এবং স্ট্যান্ডিং। তিনটি পজিশন থাকার জন্য এই ইভেন্টের নামকরণ রাইফেল থ্রি পজিশনস। এই ইভেন্টটি অন্য শুটিং ইভেন্টের থেকে অনেক বেশি কঠিন। মনু ভাকের যে দশ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতলেন সেটি হয় ইনডোরে। কিন্তু ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনস্ হয় আউটডোরে ফলে শুটিং এর সময় হাওয়াকে বশ মানাতে বেশ বেগ পেতে হয়। স্বপ্নীল প্রোন এবং নীলিং পজিশনে পাঁচ নম্বরে ছিলেন কিন্তু স্ট্যান্ডিং পজিশনটা তার শক্তিশালী পজিসন। আর এই পজিশনেই তিনি বাজিমাত করেছেন।ফলে স্বপ্নীলের ব্রোঞ্জ জয় সত্যিই বড় প্রাপ্তি।
জীবন যুদ্ধে হার, প্রয়াত ক্রিকেটার অংশুমান গায়কোয়াড়
স্বপ্নীল একাগ্রতা আনার জন্য হর হর মহাদেব আওড়ান। তিনি ভীষণ ঈশ্বরবিশ্বাসী। শিবের ভক্ত তিনি। পিঠে তার শিবের ট্যাটু আছে। তার ডান হাতে অর্জুনের ট্যাটু। এবং তার পাশে “প্রমিস” লেখা। স্বপ্নীলের কোচ দিপালী দেবী জানান তার হাতে প্রমিস লেখার অর্থ। স্বপ্নীল নিজেই নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জীবনে বড় কিছু করার। অর্জুনের মতন লক্ষ্যভেদী হওয়ার। স্বপ্নীল তার কোচ দিপালী দেবীকে “দ্বিতীয় মা” হিসেবে সম্বোধন করেছেন। দিপালী দেবী জানান স্বপ্নীল ভীষণ ঠান্ডা মেজাজের। তিনি সমস্ত অবস্থায় নিজের মনকে শান্ত রাখতে পারেন।