ব্যুরো নিউজ ২৬ মে : ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পর এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহে এবার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক ভারতের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা উচিত। ‘নয় ভারত টাইমস’ এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেজর জেনারেল মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ২৫ মে থেকে চীন সফর করবে। এই প্রতিনিধি দলটি চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নোরিঙ্কো (NORINCO) দ্বারা তৈরি ১৫৫ মিমি SH-15 সেল্ফ-প্রপেলড হাউইটজারের সরাসরি ফায়ারিং পর্যবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং কেন ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, তার বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো।


বাংলাদেশের অস্ত্র ক্রয়: আঞ্চলিক ভারসাম্যে প্রভাবের আশঙ্কা

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চায়না নর্থ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপ কর্পোরেশন লিমিটেড (NORINCO) থেকে ট্রাক-মাউন্টেড সেল্ফ-প্রপেলড হাউইটজার কেনার পরিকল্পনা করছে। উল্লেখ্য, নোরিঙ্কো একটি প্রধান চীনা প্রতিরক্ষা সংস্থা, যা পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) -কে অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য পরিচিত।

‘অপারেশন সিঁদুর’ এর সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে থাকছেন না ইউসুফ পাঠান, তৃণমূল সাংসদের সিদ্ধান্ত


SH-15 আর্টিলারি সিস্টেম: পাকিস্তান কর্তৃক ব্যবহৃত মারণাস্ত্র

SH-15 আর্টিলারি সিস্টেমটি ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) দ্বারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। চীনা প্রতিরক্ষা সংস্থার এটি একটি নতুন অস্ত্র হলেও, এটি পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এই কামানটি প্রচলিত এবং রকেট-সহায়ক রাউন্ড সহ বিভিন্ন ধরনের শেল ফায়ার করতে সক্ষম।

পাঠকদের মনে রাখা দরকার, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় পাকিস্তান LoC-তে ভারতের বিরুদ্ধে এই একই আর্টিলারি গান ব্যবহার করেছিল। বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতায় এই ধরনের অত্যাধুনিক চীনা অস্ত্রের অন্তর্ভুক্তি আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে এবং ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হতে পারে।


চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক: হাসিনার প্রস্থান ও বেইজিংয়ের নতুন সুযোগ

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, হাসিনাপরবর্তী বাংলাদেশ চীনের জন্য একটি নতুন সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে এমন নীতিগুলিতে যেখানে পূর্ববর্তী সরকার ভারতের প্রতি অগ্রাধিকার দেখিয়েছিল, যেমন তিস্তা প্রকল্প। আইএএনএস (IANS) এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই উদ্দেশ্য নিয়েই চীন ঢাকার সঙ্গে একটি সতর্ক এবং হিসেবি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। তাদের ‘নন-ইন্টারFERENCE’ (অহস্তক্ষেপ) পদ্ধতির প্রদর্শন হিসেবে, বেইজিং কেবল অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেই নয়, বরং সমস্ত রাজনৈতিক দলের (বর্তমানে বর্জন করা আওয়ামী লীগ ব্যতীত) প্রতিনিধিদেরও ‘ভারী সমর্থন’ এর মাধ্যমে চীনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

কলকাতায় তিরঙ্গা যাত্রা ,বিএসএফ জওয়ান মুক্তি, ভুয়ো খবর দমন, সন্ত্রাসবাদ নিপাতন : মোদীর নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত দাবি শুভেন্দু অধিকারীর


বাংলাদেশের নির্বাচন ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয়তা

পাঠকদের মনে রাখা উচিত যে, বাংলাদেশের নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, কোনো স্পষ্ট রোডম্যাপ এখনও নেই। এর মধ্যেই চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের চীনে আমন্ত্রণ জানিয়ে দল-ভিত্তিক (party-to-party) সম্পর্ক স্থাপন শুরু করেছে। এই ধরনের সক্রিয়তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের গভীর আগ্রহ এবং সম্ভাব্য প্রভাব বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সামগ্রিকভাবে, বাংলাদেশের এই সামরিক ক্রয় এবং চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক ভারতের জন্য ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর