লাবনী চৌধুরী, ৬ এপ্রিল: রাজ্যে আবারও কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওপর হামলা। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি অর্থাৎ এন আই এ এর আধিকারিকরা গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগরের অর্জুন নগর গ্রামে। সেখানে বলাই মাইতি ও মনব্রত জানা নামক দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করার পর প্রথমে বলাই মাইতিকে গাড়িতে তোলা হয় তারপর মনব্রত জানাকে গাড়িতে তোলার সময় উত্তেজিত জনতা আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ওপর।
এর আগেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছিল সন্দেশখালিতে। সেখানে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয় ইডি আধিকারিকরা। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় দুই ইডি কর্তার, ভাঙচুর চালানো হয় গাড়িতে। এমনকি ল্যাপটপও খোয়া যায় তদন্তকারী আধিকারিকদের। আর এবার ২০২২ সালে ঘটা ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি অর্থাৎ এন আই এ। সেই মতোই তদন্তে নেমে ভূপতিনগরের অর্জুন নগর গ্রামে অভিযান চালায় তদন্তকারি দল। সেখানেই ফের আক্রান্ত হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা।
সন্দেশখালীর আঁচ এবার ভূপতিনগরে ,কাশ্মীরের ধাঁচে ছোড়া হলো পাথর!
সন্দেশখালির ধাঁচে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ওপর হামলা চালানো হলেও তফাৎ শুধু একটাই। সেখানে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছিল আধিকারিকদের। কিন্তু এবার খালি হাতে নয়, অভিযুক্ত বলাই মাইতি ও মনব্রত জানাকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তুলে একেবারে কলকাতায় নিয়ে এসেছে এন আই এ।
তবে সেবারেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযান চালালে গর্জে উঠতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে তার অভিযোগ ছিল, কেন লোকাল থানাকে আগে থেকে জানিয়ে সেখানে তদন্তে আসেনি ইডি কর্তারা? আর এবারও ভূপতিনগর কাণ্ডে তার অন্যথা হল না।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডে হাজিরার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তরা হাজিরা দেন্নি। আর সেই তদন্তে নেমে শুক্রবার অনেক রাতেই ভূপতিনগরে অভিযান চালায় এনআইএ। তৃণমূল নেতা বাদল মাইতির বাড়িতে অভিযান চালানোর পরেই ঘটে বিপত্তি। তবে এই ঘটনাতেও ফের একই সুর দল নেত্রীর গলায়। কেন মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে যাবে?
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখান থেকেই এবার সুর চড়ালেন তিনি। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পুলিশকে জানিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। মাঝরাতে যদি গ্রামের লোক দেখেন কিছু লোক আসছেন, তাঁরা কীভাবে বুঝবেন? ভোটের আগে কেন গ্রেফতার করা হবে? সেই প্রশ্নও তোলেন মমতা। বিজেপিকে তোপ দেগে বলেন, সব বুথ এজেন্টকে গ্রেফতার করবে? এই করে ভোটে জিতবে? এই সব বিজেপির নোংরামি।