মহাকুম্ভ ২০২৫ঃ উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে এক বিশাল প্রভাব

ব্যুরো নিউজ,২৬ ফেব্রুয়ারি :মহাকুম্ভ ২০২৫ আজ শেষ হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে এক বিশাল প্রভাব পড়বে, যা ৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি বৃদ্ধি করতে পারে, এমনটাই জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ১৩ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান ৪৫ দিন ধরে চলেছে, এবং এর শেষ দিনটি এসেছে মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে, যেখানে নদী গঙ্গায় হাজার হাজার ভক্ত স্নান করবেন। এবারের মহাকুম্ভ মেলা ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে গণ্য হবে, যেখানে ৬৫ কোটি ভক্ত অংশগ্রহণ করেছেন।

রাহুর কুম্ভ রাশিতে গোচর: ২০২৫ সালে কোন রাশির জন্য এটি শুভ?

মহাকুম্ভ ২০২৫ বিশেষ কেন?

এই মহাকুম্ভ মেলার সাথে যুক্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় ব্র্যান্ড যারা এই বড় অনুষ্ঠানকে ব্যবসায়িক সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। যেমন, FMCG, ফিনটেক এবং টেক স্টার্ট-আপসগুলো তাদের বাজার সম্প্রসারণের জন্য এই মহা আধ্যাত্মিক সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছে। এর আগের কুম্ভ মেলাগুলিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। যেমন, ২০১৩ সালের কুম্ভ মেলায় ১২,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব অর্জিত হয়েছিল, এবং ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১.২ লাখ কোটি টাকায়।এই মহাকুম্ভ মেলার জন্য সরকারের মোট ব্যয় ছিল ৫,০০০ কোটি টাকা, এবং এর মাধ্যমে ২ লাখ কোটি টাকার ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মহাকুম্ভ ২০২৫ কে অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি গেম-চেঞ্জার হিসেবে দেখছে অনেকে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।

মহাকুম্ভ ২০২৫ এক বিরল আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান, যা প্রতি ১৪৪ বছর পর একবার ঘটে। এটি অন্যান্য কুম্ভ মেলা এবং অর্ধকুম্ভ মেলার থেকে অনেক বেশি পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই মহাকুম্ভ মেলা প্রতি ১২ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি চারটি পবিত্র স্থানে—প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী এবং নাশিকে—আয়োজিত হয়। তবে, মহাকুম্ভ মেলা এক বিশেষ ঘটনা, যা  ১৪৪ বছরে একবার ঘটে, এবং ২০২৫ সালে এই অনুষ্ঠানটি প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি ভক্ত অংশগ্রহণ করছেন।

মহাকুম্ভের বাণিজ্যিক বিস্তারঃ ৩ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসার নতুন নজির

মহাকুম্ভ মেলা নিয়ে কিছু বিতর্ক

মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫ নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মেলাকে “মৃত্যু কুম্ভ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এই কথাগুলি বলেছেন যে, প্রয়াগরাজে এবং দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে অনুষ্ঠানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন উঠেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, যথাযথ পরিকল্পনা না থাকায় এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে।এছাড়া, স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতীও একইরকম মন্তব্য করেছেন, এবং তিনি বলেছেন যে, এতো বড় সমাবেশের জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করা উচিত ছিল, এবং জনগণের নিরাপত্তা ও হোটেল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আরও সতর্কতা নেওয়া উচিত ছিল।তবে বিজেপি নেতারা এই মন্তব্যগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুম্ভ মেলার ঐতিহ্য এবং গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন এবং এটা তাঁর রাজনীতি ও ভোটব্যাংক চিন্তার প্রতিফলন।

মহাকুম্ভ মেলা প্রয়াগরাজে যানবাহন নিষেধাজ্ঞা জারি

মহাকুম্ভ ২০২৫ এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব

মহাকুম্ভ ২০২৫ একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ, যার মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে লাভবান হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্য ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মুখ দেখতে পারে। এর ফলে নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হয়েছে, এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ী এবং ভক্তরা এখানে আসছেন।

এটি ইতিমধ্যেই ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বড় ঘটনা হয়ে উঠেছে, এবং সরকারের আশা, এই মহা আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর