কমরেড কুণাল ঘোষ

ব্যুরো নিউজ ১১ জুন : বাম জমানার সেই ‘রহস্যময়’ মনীষা অন্তর্ধানের ঘটনা নিয়ে আসছে নতুন বাংলা ছবি ‘কর্পূর’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, কর্পূরের মতো ‘উবে যাওয়া’ সেই ঘটনাকে আবারও বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনছে পরিচালক অরিন্দম শীল। তবে ছবির সবচেয়ে ‘মজাদার’ দিক হলো, সাংবাদিক ও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই ছবিতে একজন দুঁদে সিপিএম নেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন! ভাবছেন, এ কেমন রসিকতা? একদা বামেদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য বিখ্যাত কুণাল, এখন নিজেই লাল শিবিরের নেতা! আসুন, এই  ছবিতে কী কী গোপন রহস্য লুকিয়ে আছে, তা জেনে নেওয়া যাক।


হঠাৎ নেতা থেকে অভিনেতা: ‘পার্টির নির্দেশ’, নাকি নতুন ‘শখের’ শুরু?

আচমকা অভিনয়ে আসার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে কুণাল ঘোষ নিজেই বললেন, “আমি নানা ধরনের কাজ করি। কৈশোর থেকেই সাংবাদিকতা করি। লেখালেখি করি, গল্প, উপন্যাস লিখি। নানা সমাজ সেবামূলক কাজে থাকি এবং রাজনীতি করি। অভিনয়ের আমি ভক্ত। ভাল লাগে। একটা করে দেখি, পারি কি না।” বুঝুন তাহলে, সাংবাদিকতা, লেখালেখি, সমাজসেবা, রাজনীতি – সবকিছুর পর এবার ‘শখের’ অভিনয়েও হাতেখড়ি! হয়তো কমরেডদের মতোই তিনিও মনে করেন, ‘পার্টি যা বলবে, সেটাই করতে হবে’, আর এখানে ‘পার্টি’ হলেন অরিন্দম শীল।
কুণাল আরও জানালেন, অরিন্দম শীল নাকি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কারণ সেই সময়টায় তিনি পুরোদমে সাংবাদিকতা করতেন। প্রথমে একটি চরিত্র, তারপর ‘শিফট’ করে অন্য চরিত্রে। এবং কুণালের ‘শর্ত’ ছিল, যদি অভিনয় করতেই হয়, তাহলে এই ‘সিপিএম নেতা’র চরিত্রটিই করবেন! কী বোঝাতে চাইলেন কুণাল? বাম আমলের ‘ক্ষমতাশালী’ নেতার চরিত্র নাকি তাঁর ‘ব্যক্তিত্বের’ সঙ্গে বেশি মানানসই? কে জানে! হয়তো এতদিন চাপা রাখা ‘অভিনয়ের’ ক্ষুধাটা এবার মেটাতে চাইছেন তিনি, বিশেষ করে বাম জমানার ‘রহস্যময়’ ঘটনার প্রেক্ষাপটে!

‘ওরা নীরবতা বেছে নিয়েছে…’ – ফাওয়াদ-মাহিরাকে তোপ দাগলেন অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি! পাকিস্তানি শিল্পীদের নিষেধাজ্ঞাকে জানালেন সমর্থন।


মনীষা অন্তর্ধান: ‘উবে যাওয়া’ সত্যের খোঁজে এক ‘সিনেমাটিক’ প্রয়াস?

এই ছবির মূল বিষয়বস্তু নব্বইয়ের দশকের শিক্ষা দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী নিয়ামক মনীষা মুখোপাধ্যায়ের ‘রহস্যময় অন্তর্ধান’। লেখিকা দীপান্বিতা রায়ের উপন্যাস ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘কর্পূর’। পরিচালক অরিন্দম শীল মনে করেন, এই ঘটনায় প্রচুর ‘সিনেমাটিক এলিমেন্টস’ রয়েছে। তাঁর মতে, আমাদের দেশে ‘পলিটিক্যাল থ্রিলারের সিনেম্যাটিক ভার্সান’ হয় না, কারণ ‘অমুক পার্টি, অমুক নেতার তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়’। কিন্তু এই ক্ষেত্রে, মনীষা মুখোপাধ্যায়ের অন্তর্ধান ছিল ‘অদ্ভূত ও অত্যন্ত সিরিয়াস একটি ঘটনা’, যা কর্পূরের মতোই উবে গেলেও ‘গন্ধটা’, অর্থাৎ রেশটা থেকে গেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, এই ‘সিনেমাটিক’ প্রচেষ্টায় কি ‘উবে যাওয়া’ সেই আসল সত্য সামনে আসবে, নাকি রাজনৈতিক দলীয় তকমা এড়িয়ে ‘শিল্পের খাতিরে’ কিছু নতুন ‘রহস্য’ তৈরি হবে? নাকি ‘গন্ধটা’ এমনভাবে ছড়ানো হবে, যাতে দর্শকদের মনে হয়, যা উবে গেছে, তা উবে যাওয়াই ভালো?

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কেন্দ্রের ঐতিহাসিক ঘোষণা: ১৫ জুন থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুবিধা


কুণাল ঘোষের ‘নীরবতা’: ‘রহস্য’ উস্কে দেওয়ার নতুন কৌশল?

কুণাল ঘোষ অবশ্য মনীষা মুখোপাধ্যায় নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “আমি ওই ভদ্রমহিলাকে নিয়ে কিছুই বলব না। যা বলার পরিচালক বলবেন।” তিনি আরও বললেন, “এই ঘটনাটি আমি কাছ থেকে দেখেছি। ওই মহিলার মা বারবার আসতেন। সেই সময় ন্যায় বিচার চাইতেন। সেই সবই দেখেছি।” অদ্ভুত নীরবতা! বছরের পর বছর ধরে নানা বিষয়ে সরব কুণাল ঘোষ, কিন্তু যে ঘটনা নিয়ে ছবি হচ্ছে এবং যে ছবিতে তিনি নিজেই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ চরিত্রে, সে বিষয়ে তিনি ‘স্পেশাল’ কিছু বলতে নারাজ।
এ কি তাঁর ‘অভিনয়ের’ প্রস্তুতি, যেখানে রহস্যের আবরণ বজায় রাখাটাই দস্তুর? নাকি সিপিএম জমানার সেই ‘ধামাচাপা দেওয়া’ ঘটনার গভীরে এমন কিছু আছে, যা এখনও ‘উবে’ যায়নি এবং তা নিয়ে বেশি কথা বলাটা ‘রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর’ হতে পারে? কুণালের এই ‘কৌশলী নীরবতা’ই হয়তো ছবির প্রতি দর্শকদের কৌতূহল আরও বাড়িয়ে দেবে, বিশেষ করে যারা বাম আমলের ‘রহস্যময়’ ঘটনাগুলো নিয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছেন। ‘কর্পূর’ ছবি কি শেষ পর্যন্ত সেই অন্ধকার দূর করতে পারবে, নাকি নিজেই আরও একটি ‘রহস্য’ তৈরি করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর