ব্যুরো নিউজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি:২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫—এই দিনটি ছিল মহাকুম্ভের শেষ দিন, এবং এই দিনেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল মহাশিবরাত্রির ষষ্ঠ এবং শেষ পুণ্যস্নান উৎসব। প্রশাসনের হিসাব অনুসারে, এবারের মহাকুম্ভ মেলায় অন্তত ৬৬ কোটি মানুষ সমাগম করেছিলেন। বুধবার, মহাকুম্ভের শেষ দিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র এদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ত্রিবেণী সঙ্গমে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ পুণ্যার্থী পুণ্যস্নান করেছেন।মহাকুম্ভের সমাপ্তি উপলক্ষে ভারতীয় বায়ুসেনা একটি বিশেষ ‘ফ্লাইপাস্ট’ উপস্থাপন করে, যা সঙ্গমের আকাশে এক অনন্য মাত্রা যোগ করে। এই আয়োজনের শুরু হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারি, পৌষ পূর্ণিমার স্নানের মাধ্যমে। প্রথমে প্রশাসনের ধারণা ছিল, এবারের মহাকুম্ভে ৪৫ কোটি মানুষ আসবেন।
মহাকুম্ভ ২০২৫ঃ উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে এক বিশাল প্রভাব, কি বলছে পরিসংখ্যান?
কুম্ভের ইতিহাসে এটি ছিল সর্ববৃহৎ জমায়েত
কিন্তু বাস্তবে, সেই সংখ্যাটি আরও বেশি হয়েছে, এবং সরকারের দাবি, কুম্ভের ইতিহাসে এটি ছিল সর্ববৃহৎ জমায়েত।এবারের মহাকুম্ভে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও, বিদেশ থেকেও হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী এসেছিলেন। অনেকেই হিন্দু ধর্মে দীক্ষালাভ করেছেন। মহাকুম্ভের শেষ দিনেও, ভোর থেকে মানুষ পুণ্যস্নানের জন্য ভিড় জমাতে শুরু করে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, শুভ মহরতের সময় শুরু হয় বুধবার সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে এবং তা চলতে থাকবে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ০৯ মিনিট পর্যন্ত।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, বুধবার ভোর রাত ২টা থেকেই মানুষ পুণ্যস্নান করতে শুরু করেন। দুপুর ১২টা নাগাদ স্নানকারী মানুষের সংখ্যা ছিল ১.০১ কোটি, এবং সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা বেড়ে ১.৪৪ কোটিতে পৌঁছায়। মহাকুম্ভ চলাকালীন ছ’টি প্রধান পুণ্যস্নানের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে ৩টি অমৃত স্নানও ছিল। এই উৎসবগুলো হল— ১৪ জানুয়ারির মকর সংক্রান্তি, ২৯ জানুয়ারির মৌনি অমাবস্যা এবং ৩ ফেব্রুয়ারির বসন্ত পঞ্চমী স্নান। প্রতিটি স্নান উৎসবে ২০ কুইন্ট্যাল গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ করা হয়েছিল।
মহাকুম্ভে পূণ্যার্থীদের জন্য নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা: শিবরাত্রির শেষ শাহি স্নান
মহাকুম্ভের সাফল্যের কথা জানিয়ে, মহাকুম্ভ নগরের জেলাশাসক বিজয় কিরণ আনন্দ বলেন, মহাশিবরাত্রির ষষ্ঠ এবং সর্বশেষ স্নান উৎসবের মাধ্যমে মহাকুম্ভ অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এবং নির্বিঘ্নে সমাপ্ত হয়েছে। যদিও শুভ মহরৎ চলবে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত, প্রশাসনিক ব্যবস্থা ততদিন পর্যন্ত বজায় থাকবে।এবারের মহাকুম্ভ ছিল এক ঐতিহাসিক আয়োজন, যা শুধু ভারতের ভক্তদের জন্য নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্যও এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল।