ব্যুরো নিউজ ১৪ আগস্ট ২০২৫ : ভারতীয় রেলওয়ের অধীনস্থ মেট্রো রেলওয়ে কলকাতা এবং রেনাল কেয়ার (কিডনি পরিষেবা) প্রদানকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান নেফ্রো কেয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেডের মধ্যে এক যুগান্তকারী অংশীদারিত্বের সূচনা হলো। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) মডেলের অধীনে এই অনন্য উদ্যোগটি ভারতের স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। বৃহস্পতিবার, ১৪ই আগস্ট ২০২৫-এ, মেট্রো রেলওয়ে পরিচালিত টালিগঞ্জের তপন সিনহা মেমোরিয়াল হাসপাতালে এই অত্যাধুনিক রেনাল কেয়ার ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়েছে।
সহযোগিতার মূল লক্ষ্য ও তাৎপর্য
এই অংশীদারিত্বের মূল উদ্দেশ্য হলো মেট্রো রেলওয়ের সুবিশাল পরিকাঠামো এবং শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হাসপাতালের যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে নেফ্রো কেয়ার ইন্ডিয়ার উন্নত চিকিৎসা দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো। বিখ্যাত নেফ্রোলজিস্ট ডঃ প্রতিম সেনগুপ্তের নেতৃত্বে নেফ্রো কেয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেড কিডনি চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন মানদণ্ড স্থাপনে বদ্ধপরিকর। তাদের লক্ষ্য সমগ্র ভারতে ৩০০টি উন্নতমানের রেনাল কেয়ার ইউনিটের মাধ্যমে ১০ লক্ষেরও বেশি রোগীকে উচ্চমানের পরিষেবা প্রদান করা। এই সহযোগিতার ফলে, কলকাতার পাশাপাশি আশেপাশের অঞ্চলের বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে বিশ্বমানের কিডনি পরিষেবা আরও সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
দীর্ঘমেয়াদী ডায়ালাইসিস ও জীবনমানে প্রভাব
কিডনি বিকল হওয়া মানব স্বাস্থ্যের জন্য এক মারাত্মক হুমকি। এই অবস্থায় শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য রোগীদের প্রায়শই জীবনব্যাপী ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভর করতে হয়। এই দীর্ঘ ও কষ্টকর চিকিৎসা শুধু রোগীর শারীরিক ও মানসিক চাপই বাড়ায় না, বরং আর্থিক ও সামাজিক জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। তাই, ডায়ালাইসিস পরিষেবা সহজলভ্য করা এবং রোগীদের জীবনমান উন্নত করার জন্য উন্নত চিকিৎসা সমাধান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য।
আরামদায়ক জীবনযাপন মহিলাদের অনেক গুরুতর রোগের মূল কারণ, প্রতিরোধের উপায় জেনে নিন
দেশের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্ত
মেট্রো রেলের মতো একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার পরিকাঠামোর সঙ্গে বেসরকারি খাতের অত্যাধুনিক চিকিৎসা উদ্ভাবনের এই সংমিশ্রণটি জনস্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এক নতুন মডেল তৈরি করেছে। এই PPP মডেলটি শুধুমাত্র কলকাতার মানুষের জন্যই নয়, বরং সারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী এবং ফলপ্রসূ উদাহরণ হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কীভাবে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়।
এই উদ্যোগটি একদিকে যেমন কিডনি রোগীদের জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে, তেমনই এটি কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের কাছে সাশ্রয়ী ও গুণগত মানের কিডনি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার এক দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি নিঃসন্দেহে ভারতের স্বাস্থ্যসেবা খাতের ইতিহাসে এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।