ব্যুরো নিউজ,২৪ এপ্রিল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় নিহত হন দুই বাঙালি— বিতান অধিকারী ও সমীর গুহ। মঙ্গলবার সেই দুঃসংবাদের রেশ ধরে বুধবার রাতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তাঁদের নিথর দেহ এসে পৌঁছয় কলকাতায়। শহরের বুকে ফিরে আসে শোক, স্তব্ধতা আর অপ্রস্তুত প্রশ্ন— কেন এমনটা হল? সাড়ে তিন বছরের হৃদান কিছুই বুঝতে পারছে না। শুধু জানে, কফিনে যিনি শুয়ে আছেন, তিনি তার বাবা। বারবার বলেছে, “বাবা বলেছিল এবার এসে আমাদের নিয়ে যাবে। কিন্তু বাবা কই?” শিশুর এ কথায় কেঁপে উঠেছে বহু মানুষ। তার মা, সোহিনী অধিকারী বলেন, “পারিবারিক সমস্যার কারণে একটু সময় কাটাতে গিয়েছিলাম কাশ্মীরে। কিন্তু সেই ভ্রমণ চিরদিনের বিচ্ছেদ হয়ে রইল।
মমতার খামে রাজনৈতিক কৌশল? দিলীপের দরজায় পৌঁছল নবান্ন!
বিষাদের দিন
বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লি হয়ে কলকাতায় পৌঁছয় নিহতদের দেহ। এয়ারপোর্টের কার্গো গেট ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তা। সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ প্রথমে বের হয় সমীর গুহর দেহ, পরে বিতান অধিকারীর। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল ও বিজেপি নেতারাও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
বেহালার ক্লাবমাঠে সমীরকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁর পরিবার, সহকর্মী ও প্রতিবেশীরা। কিশোরী কন্যা শুভাঙ্গী নির্বাক, পাথরের মতো বসে ছিল বাবার কফিনের পাশে। অন্যদিকে বিতানের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর রূপকথা আবাসনের দোতলা ফ্ল্যাটে। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কাঁপা চোখে জল, স্তব্ধতা ছাড়িয়ে কিছু বলার ভাষা নেই।
তবে দৃশ্যপটে এক হৃদয়বিদারক মুহূর্ত আসে, যখন বিতানের স্ত্রী বারান্দা পর্যন্ত এসে ফিরে যান। কারণ? সেখানে রাখা খাঁচাবন্দি দুটি ককাটেল পাখি। তিনি বলেন, “এই পাখি দুটো ছেলেকে কিনে দিতে বলেছিলে। ওরা রয়ে গেল। তুমি আর নেই!” রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কেওড়াতলা শ্মশানে সম্পন্ন হয় বিতান ও সমীরের শেষকৃত্য। শেষযাত্রায় ঢেকে ছিল কষ্ট, কান্না আর কিছু অসমাপ্ত প্রতিশ্রুতি।